Banner
ছিঃ, ছিঃ এবং ছিঃ! ধিক্কার কুৎসিত পুরুষতান্ত্রিক উল্লাসকে — শামসুজ্জোহা মানিক

লিখেছেনঃ শামসুজ্জোহা মানিক, আপডেটঃ August 14, 2021, 12:00 AM, Hits: 944

 

কয়েক দিন ধরে পরীমণি, মৌ, পিয়াসা ইত্যাদি কয়েকজন অভিনেত্রী এবং কথিত মডেল নারীকে নিয়ে যেভাবে রাষ্ট্র এবং প্রচার মাধ্যম বা মিডিয়ার মূলধারা উন্মত্ত প্রচারে নেমে পড়েছে তাকে আমার এক কথায় নারী নিগ্রহ এবং নারীর মর্যাদা হানির উদ্দেশ্যে এক অতি কুৎসিত পুরুষতান্ত্রিক অভিযান মনে হয়েছে, যার প্রতি আমার একটাই মন্তব্য উঠে আসে — ছিঃ, ছিঃ এবং ছিঃ!

ধরে নিলাম এইসব অভিযুক্ত নারী ভয়ঙ্কর এবং অতি দুর্ধর্ষ অপরাধী। কিন্তু একটা দুগ্ধপোষ্য বালকও এ কথা বিশ্বাস করবে না যে, আমাদের মতো এত নিকৃষ্ট ও বর্বর প্ররুষতান্ত্রিক সমাজে কোনও নারীর পক্ষে পুরুষের আশ্রয়, অভিভাবকত্ব এবং পরিচালনা ছাড়া এ ধরনের অপরাধী হয়ে উঠা সম্ভব। যারা এদের এসব কথিত অপরাধের ফিরিস্তি বয়ান করে যাচ্ছে তারা কি সব মানুষকে এতটাই বোকা মনে করে যে, তারা যা খুশী তা বলবে আর সবাই তা বিশ্বাস করবে?

গরুর পেটে সোনা, হীরা আরও কত কিছু পাচারের নায়িকা নয়, বরং এখন নায়ক বা নেতা হিসাবে দেখতে পাচ্ছি এইসব বিভিন্ন নামে কথিত নারীদৈরকে? তাদের দস্যুরাণীর মতো রোমাঞ্চকর ভূমিকার গল্প ডিটেকটিভ গল্পকেও হার মানায়। সবই মানলাম। কিন্তু এই থ্রিলার কাহিনীর গল্পগুলির নায়িকা সৃষ্টির পিছনের নায়কদের নাম আসে না কেন? নাকি ভূমিদস্যু সোবহান পরিবারের সদস্য এবং মুনিয়ার খুনী আনভীরের মতো দস্যু, লুচ্চা ও খুনী হিসাবে পরিচিতদের নাম প্রকাশ্যে আনলে নিজেদেরই অস্তিত্বে আঘাত লাগে?

ঠিক আছে, অপরাধের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের অভিযানের প্রয়োজন আছে। কিন্তু তার ধরন কি এমন হওয়া উচিত যার ফল বাস্তবে হয়ে দাঁড়ায় সামগ্রিকভাবে নারীদের বেআব্রু করা, তাদের স্বাধীন সত্তাকে বিদ্রূপ ও মস্করার সামগ্রী করা? হ্যাঁ, আমার কাছে মনে হয়েছে যেন পুরুষতন্ত্রের প্রতিনিধি হিসাবে একদল পুরুষ রাষ্ট্র ও মিডিয়ার ক্ষমতা হাতে নিয়ে আরেক ধরনের নারীধর্ষণের অতি কুৎসিত উৎসব করে চলেছে। এই পুরুষ নীতি-পুলিশদের দাপটের সামনে নারীরা অসহায়, প্রতিকারহীন। প্রতিবাদের কিছু কণ্ঠ কখনও শুনা গেলেও সেসব ক্ষীণ এবং সমাজ ও প্রচারের মূলধারায় সেসব প্রায় অনুপস্থিত।

এই সমগ্র কুৎসিত চরিত্র হনন বা ধর্ষণ উৎসবে একটা বিষয় যে কোনও আধুনিক ও সভ্য মানুষকে বিচলিত করবে। সেটা হচ্ছে মদ বা মদের বোতল রাখাকে সিরিয়াস অপরাধ হিসাবে গণ্য করে সেটার ফলাও প্রচার। এইসব নারী ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক অপরাধী, কারণ এদের বাসগৃহ থেকে উদ্ধার হয়েছে মদ ও মদের বোতল! এর চেয়ে হাস্যকর বিষয় আর কিছু হতে পারে না। প্রশ্ন কি করা যাবে, যারা এগুলি বলে বেড়াচ্ছেন তাদের কয়জনের বাসায় এই বস্তুগুলি থাকে না এবং এগুলি পান করা হয় না? এই প্রশ্নও কি করা অন্যায় হবে যে, ঢাকায় কয়টি উচ্চবিত্তের বাসগৃহ আছে যেখানে মদ এবং মিনিবার নাই?

বাংলাদেশ যে তালেবানী আফগানিস্তানের কাছাকাছি একটা মধ্যযুগীয় বর্বর এবং ধর্মান্ধ ইসলামী রাষ্ট্র তা এই কুৎসিত নারী নিগ্রহী অভিযানের এই একটি অভিযোগকে প্রাধান্য দেওয়া থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। যা বুঝা গেল, দেশে নৈতিকতার মান রক্ষায় মদ-বিরোধী এমন অভিযানের গুরুত্ব! যারা এই যুক্তি দেখাবেন তাদেরকে প্রশ্ন করা যাবে কি, তাহলে পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, রাশিয়ার মতো মদপায়ী দেশগুলির নৈতিকতা এবং সভ্যতা কি বাংলাদেশের চেয়েও অনেক নীচে পড়ে আছে? ওদের কাছে আমাদের দেশ নীতি-নৈতিকতা শিখবে নাকি ওদেরকে এসব বিষয়ে জ্ঞান দান করবে?

যাইহোক, এই আচরণ থেকে একটা বিষয় বুঝা গেল, তা হল বাংলাদেশে যদি কখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বা রাশিয়ার পুতিন সফরে আসেন তবে তাদের মদ পানের সময় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত বাহিনী সম্পর্কে খুব সতর্ক থাকতে হবে। অথবা তাদের মদপানের সময় ডাক্তারের সার্টিফিকেট এবং আনুষঙ্গিক কাগজপত্র রাখতে হবে। নতুবা বাংলাদেশের আইন ভঙ্গের জন্য তাদেরকে যে কোনও সময গ্রেফতার করা হতে পারে! কিন্তু সে মুরোদ কি বাংলাদেশের পুলিশ কিংবা আর কারও আছে? বরং বিশেষত নারী হবার কারণে যত বীরত্ব দুর্বল পরীমণিদের উপর!

কী হাস্যকর মধ্যযুগীয় এক বিধান বাংলাদেশে চালু আছে, যার প্রয়োগ মোটেই সবলের বিরুদ্ধে নয়, বরং ‘সফ্ট্ টার্গেট’ হিসাবে বিশেষ করে পরীমণির মতো নারীদের বিরুদ্ধে হবে। হ্যাঁ, রাষ্ট্রও জানে নারীরা এদেশে সফ্ট টার্গেট, সুতরাং এদেরকেই সহজে যে কোনও ছুতায় অভিযুক্ত করা যায় এবং রগরগে কাহিনী প্রচার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবার আগেই মিডিয়া ট্রায়াল করা যায়। এখন পরীমণিসহ সব কয়জন নারীর মিডিয়া ট্রায়াল চলছে।

মদ্যপান প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য থেকে কেউ যেন এ কথা মনে না করেন যে, আমি মদ্যপানকে উৎসাহিত করি। প্রথম কথা, আমাদের মতো উষ্ণ দেশে আমি এটিকে সাধারণভাবে অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষেত্র বিশেষে ক্ষতিকরও মনে করি। শীতপ্রধান উন্নত দেশগুলিতেও মদপানের কিছু নিয়ম আছে। যেমন মাতাল হয়ে পাবলিক নুইসেন্স ঘটালে তার জন্য শাস্তির বিধান আছে। মদ্যপ অবস্থায় সেই সব দেশে গাড়ী চালানোও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর পুলিশের হাতে ধরা পড়লে আমাদের দেশের মতো পুলিশের হাতে দশ/বিশ টাকা ধরিয়ে দিয়ে সেসব দেশে পার পাবার কোনও উপায় নাই। দ্বিতীয় কথাটাও বলি। সীমিত মাত্রায় মদ পান করাকে আমি অপরাধ মনে না করলেও আমাদের দেশে যেমন সাধারণভাবে মদপানের কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না তেমন আমি নিজেও মদ পান করি না। সুতরাং নির্মোহ দৃষ্টি থেকেই আমি মদ ও মদপানের বিষয়টাকে দেখি।

তবে ইয়াবা বা এলএসডি ইত্যাদি সম্পর্কে যা পড়েছি তাতে এগুলিকে ভয়ানক ক্ষতিকর মাদক বলে ধারণা করি। এখন এগুলি সত্যি কার কাছে পাওয়া গেছে এসব নিয়ে যদি কেউ সন্দেহ করে তবে এ দেশে কি তাকে দোষ দেওয়া যাবে? এ দেশের পুলিশের এমনই সব ভূমিকার কথা আমরা হরহামেশা শুনতে পাই যে, এসব মাদক উদ্ধারের বিষয়ে নিঃশংসয় হওয়া আসলে কঠিন। পকেটের মধ্যে ইয়াবা ঢুকিয়ে নির্দোষ মানুষকে গ্রেফতার ও মামলা দিয়ে জেলে পাঠাবার বহু ঘটনার কথা আমরা কাগজে পড়ি এবং  নানানভাবে শুনি। তবে যাদের কাছে এ ধরনের মাদক পাবার ব্যাপারে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের ব্যাপারে আমি মন্তব্য করব না। বিচার বিভাগ এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা-অসত্যতার বিষয়টির বিচার করবে।

পরীমণি বা কথিত মডেল কন্যাদের সপক্ষে আমি বলতে চাই না। এদের সম্পর্কে আমি এতকাল কিছুই জানতাম না। অভিনেত্রী নায়িকা পরীমণি সম্পর্কেও না। কারণ টিভি নাটকের বাইরে বহুকাল ঢাকার সিনেমাই দেখি না। হয়ত কাগজে কখনও পরীমণির নাম চোখে পড়েছিল। কিন্তু গুরুত্ব না দেওয়ায় সেসব ভুলে গিয়েছিলাম। তবে সম্প্রতি কয়েক দিন ধরে তাদের নিয়ে যা হয়েছে এবং যার জের এখনও চলছে তাতে আমার মনে হয়েছে যে, নারীদের নিয়ে খুবই কুৎসিত একটা খেলা হচ্ছে এ দেশে। এটা কি শাসকদের মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ, যার ফলে ‘সফ্ট টার্গেট’ হিসাবে কিছুসংখ্যক নারীকে বেছে নেওয়া হয়েছে? নাকি, দেশের মূল সমস্যাগুলি থেকে জনসাধারণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে চালিত করবার জন্য এই নোংরা খেলার আয়োজন? কিংবা এটার পিছনে কি আরও বৃহত্তর কোনও ‘পাওয়ার গেম’ আছে, যার প্রথম পর্ব কেবল মঞ্চস্থ হচ্ছে?

যেটা হোক, খুবই কদর্য একটা খেলা হচ্ছে। যেভাবে খেলাটা হচ্ছে তাতে সমগ্র নারী সমাজকেই হেয় করা এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। আর তাই যে রাঘব-বোয়াল পুরুষরা বছরের পর বছর ধরে এই সব নেহায়েতই কম বয়সী মেয়েদের এই জায়গায় এনেছে তাদেরকে আড়ালেই রাখা হয়। তাই পুরুষতন্ত্রের প্রতিনিধি মিডিয়া এদের রাতের রাণী আখ্যায়িত করে উল্লাস প্রকাশ করে, কিন্তু রাতের রাজাদের কথাটা বেমালুম চেপে রাখতে পছন্দ করে। সুতরাং কথিত রাণী বা কথিত কন্যাদের যারা প্রকৃত নির্মাতা এবং ভোক্তা সেই রাঘব-বোয়াল পুরুষদেরকে সযত্নে আড়ালে রাখা হয়। এই আড়াল ভেঙ্গে কখনই কি তাদেরকে সামনে আনা হবে?

শেষ করার আগে পরীমণি সম্পর্কে বলব যে, বোট ক্লাবে তার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছিল সেটা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা বুঝি আমাদের সমাজে তার পর্যায়ের সামাজিকভাবে পরিচিত একজন নারী কী পরিমাণে অসম্মান ও নিগ্রহের শিকার হলে বোট ক্লাবের ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হতে পারেন। তিনি ঘটনার পর থানায় গিয়ে প্রতিকার পান নাই। চারদিন পর ফেসবুকে তিনি ঘটনা নিয়ে পোস্ট করলে যখন হৈচৈ শুরু হয় তখন পুলিশের টনক নড়ে। এবং তারপর তার মামলা নেওয়া হয়।

এই সময় তাকে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একজন ঊর্ধ্বতন পুরুষ কর্মকর্তা রাত বারোটার পর বোট ক্লাবে পরীমণির যাওয়া নিয়ে অনুযোগের সুরে যে মন্তব্য করেন সেটা আমার কাছে তাৎপর্যপূর্ণ মনে হয়েছিল। সেটা হল এত রাতে তার ক্লাবে যাওয়া উচিত হয় নাই।

আমার বিবেচনায় এই একটি মন্তব্য থেকে রাষ্ট্র যারা চালায় তাদের মন-মানসিকতা বেরিয়ে আসে। একজন অভিভাবক হয়ত তার কন্যার নিরাপত্তার জন্য ক্ষোভ থেকে এ কথা বলতে পারে। কিন্তু একজন পুলিশ কর্মকর্তার কি এভাবে বলা সাজে? কে রাত বারোটার পর রাস্তায় বের হবে কি হবে না কিংবা কোথায় যাবে কি যাবে না সেটা দেখার দায়িত্ব তার কিংবা যে রাষ্ট্রের তিনি কর্মচারী সেই রাষ্ট্রেরও না। তার এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান করা। যে রাষ্ট্র নারীকে পুরুষের মতো স্বাধীনভাবে এবং মর্যাদার সাথে চলাফেরার স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা না দিয়ে বরং উল্টাটা করতে চায় আজকের যুগে সেই মধ্যযুগীয় রাষ্ট্রের কী প্রয়োজন? আমি জানি না বোট ক্লাব নিয়ে উচ্চবাচ্য করার জন্য আজ পরীমণিকে এভাবে রাষ্ট্রের রোষের শিকার হতে হচ্ছে কিনা। আসলে, বোট ক্লাবে কী আছে কিংবা তার পিছনে কী রহস্য লুকিয়ে আছে?

আমার আর একটা প্রশ্ন, একজন নারী কয়জন পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে সেটা কেন রাষ্ট্র বা মিডিয়ার বিচারের বিষয় হবে? নারীর কি নিজস্ব পছন্দের কোনও মূল্য নাই? মনে রাখতে হবে জীবনটা যেমন তার, শরীরটাও তেমন তার। সেখানে তার স্বেচ্ছাসম্মতি ছাড়া কোনও পুরুষের হস্তক্ষেপের অধিকার নাই। যে কোনও সভ্য সমাজের মানদণ্ডে এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরীমণি রাত বারোটার পর বোট ক্লাবে গিয়ে থাকলে আমাদের সমাজের বাস্তবতায় সেটা তার ভুল হতে পারে, কিন্তু অপরাধ যেমন নয় তেমন যারা তার শরীরের উপর অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছিল সেই অপরাধী দুর্বৃত্ত পুরুষদের আগে বিচার এবং উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে উল্টা পরীমণিকে ফাঁসানো হচ্ছে নানান মামলায় এবং চালানো হচ্ছে মিডিয়া ট্রায়াল। কিন্তু কেন? মনে প্রশ্ন জাগাটা কি অন্যায় হবে?

যাইহোক, পরীমণি এবং কথিত মডেল কন্যাদের নিয়ে রগরগে কাহিনী দিয়ে রাষ্ট্র কয়েক দিন হয়ত এ দেশের প্রকৃত সমস্যার জায়গাগুলিকে কিছু লোকের দৃষ্টির আড়াল করতে পারবে। কিন্তু এসব দিয়ে আর কতদিন? সবচেয়ে বড় কথা প্রকৃত পুরুষ অপরাধীদের আড়াল করে নারীদের বিরুদ্ধে যেভাবে এই অভিযান একজন নারীকে সামনে রেখে পরিচালিত রাষ্ট্রের পুরুষতান্ত্রিক এবং কুৎসিত চেহারাকে উন্মোচন করেছে সেটার খেসারত এক সময় রাষ্ট্রকে দিতে হবে বৈকি। কারণ প্রতিটি ক্রিয়ার সমপরিমাণ এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে।

রচনা : ১০ আগস্ট, ২০২১      

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Archive
 
সাম্প্রতিক পোষ্টসমূহ