Banner
মুসলমানদেরকে আক্রমণ ও হত্যার দরুন কি মুহাম্মদ মদীনার ইহুদীদেরকে উচ্ছেদ করেন? – এম, এ, খান

লিখেছেনঃ এম, এ, খান, আপডেটঃ October 15, 2009, 5:00 PM, Hits: 913

ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় নবী মুহাম্মদ (৬১০-৬৩২) মদীনাকে বাসভূমি হিসাবে গ্রহণ ক’রে সেখানে শত শত বৎসর যাবৎ বসবাসকারী  ইহুদীদের উপর ভয়ঙ্কর নির্যাতন ও হত্যা চালান, যা ছিল ইহুদীদের উপর পরিচালিত প্রথম গণহত্যা। মুহাম্মদ দুইটি ইহুদী উপজাতিকে আক্রমণ ও তাদের বাসভূমি থেকে বিতাড়ন করেন; এছাড়া তৃতীয় উপজাতি বানু কুরাইযার পুরুষদের সকলকেই পাইকারীভাবে হত্যা করেন এং তাদের নারী ও শিশুদেরকে দাসে পরিণত করেন। মুহাম্মদ বহুদেবতার পূজারীদের সামনে ধর্মান্তরণ অথবা মৃত্যু এই দুইটির যে কোন একটি বেছে নিবার বাধ্যবাধকতা উপস্খিত করে আরব থেকে মূর্তি পূজা নিশ্চিহ্ন করেন। এই ধরনের বিধানের সমর্থনে তিনি উপস্খিত করেন আল্লাহর ওহী, যেমন :

কুরআন- ৯:৫ : “অত:পর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হইলে মুশরিকদিগকে যেখানে পাইবে হত্যা করিবে, তাহাদিগকে বন্দী করিবে, অবরোধ করিবে এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাহাদের জন্য ওঁৎ পাতিয়া থাকিবে। কিন্তু যদি তাহারা তওবা করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে তাহাদের পথ ছাড়িয়া দিবে; নিশ্চয় আল্লাহ্ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”

 
এবং কুরআন- ৮:৩৯ : “এবং তোমরা তাহাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতে থাকিবে যতক্ষণ না ফিৎনা (ফিৎনা অর্থ পরীক্ষা, প্রলোভন, দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা, গৃহযুদ্ধ, র্শিক, কুফ্র, ধর্মীয় নির্যাতন ইত্যাদি) দূরীভূত হয় এবং আল্লাহ্র দীন (দীন অর্থ ধর্ম) সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যদি তাহারা বিরত হয় তবে তাহারা যাহা করে আল্লাহ্ তো তাহার সম্যক দ্রষ্টা।”
 

ইত্যাদি।

মুহাম্মদের এই ধরনের নৃশংসতার সপক্ষে মুসলমানরা সর্বদা যৌক্তিকতা খুঁজে পায়। যেমন আবু শুজা নামে একজন বিশিষ্ট ইসলামী প্রচারণাকারী দাবী করেন, “মুসলমানদেরকে আক্রমণ ও হত্যা করার দরুন ইহুদীদেরকে মদীনা থেকে বিতাড়ন করা হয়েছিল। এটাকে আজকের গাজার আয়না বিবেচনা করুন।”  

ইসলামী শাস্ত্র যথাযথভাবে অনুসন্ধান করে আমি এই ধরনের দাবী ভিত্তিহীন দেখতে পেয়েছি। এ সম্পর্কে আমি আমার গ্রন্থ  Islamic Jihad: A Legacy of Forced Conversion, Imperialism, and Slavery (ইসলামী জিহাদ : জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ এবং দাসত্বের উত্তরাধিকার)-এ বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

শুজার দাবী যে মিথ্যা সেটার প্রমাণ আমি নীচে দিচ্ছি।

আসুন আমরা দেখি মদীনার ইহুদীদের সঙ্গে নবী মুহাম্মদের সম্পর্কের ধরন কেমন ছিল। জন্মস্খান মক্কা নগরে তার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবার পর ৬২২ খ্রীষ্টাব্দের জুন মাসে তিনি মদীনায় অভিবাসী হন। মক্কায় তার ধর্মের প্রসার থেমে গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় মদীনায় তার অনুপস্খিতিতেই পূর্ববর্তী তিন বছরে ৭৬ জন তার ধর্মের অনুসারী হয়েছিল। এইভাবে মদীনায় তার অনুসারীদের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। অথচ মক্কায় নবুয়তের ১৩ বছর কালীন সময়ে ইসলামে দীক্ষিত ব্যক্তির সংখ্যা মাত্র ১৫০ জনের মত দাঁড়িয়েছিল।

আউস এবং খাযরাজ মদীনার এই দুইটি মুর্তি উপাসক উপজাতির সদস্যদের মধ্যে যারা তার অনুসারী হয়েছিল (৭৬ জন) তারা তাকে মদীনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তিনি কোন গোষ্ঠী থেকে কোন প্রকার বাধা ছাড়াই মদীনায় আবাসন করেন। এমনকি সেই সময় মদীনার অধিবাসীদের মধ্যে যারা অপেক্ষাকৃত বেশী ধনী এবং প্রভাবশালী ছিল সেই ইহুদীরাও তার কোন বিরোধিতা করে নাই। মুহাম্মদ ইহুদী ধর্ম ও খ্রীষ্ট ধর্মের মত একটা একেশ্বরবাদী ধর্ম উপস্খিত করেছিলেন এবং তাতে বহুদেবতাবাদী মূর্তি উপাসকদেরকে দীক্ষিত করছিলেন। সুতরাং অনুমান করা চলে যে, এই বিবেচনা থেকে ইহুদীরা মদীনায় তার আগমনকে ভালভাবে নিয়ে থাকতে পারে।

মুহাম্মদ মদীনায় বাধাহীনভাবে তার ধর্ম প্রচার করতে থাকেন এবং দ্রুত ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় বহুদেবতাবাদীরা ইসলাম গ্রহণ করতে থাকে। কিন্তু সমস্যাটা বাধে তখন যখন তিনি আরও উচ্চাভিলাষী হয়ে ইহুদীদের এবং  খ্রীষ্টানদেরও নবী এবং ত্রাতা হিসাবে নিজেকে ঘোষণা করেন। কাজেই মুহাম্মদ প্রথম দিকে ইহুদী এবং খ্রীষ্টানদেরকে খুশী করার জন্য তাদের সম্পর্কে ভালো কথা বলেন এবং তাদের অনেক রীতিনীতি গ্রহণ করেন। প্রথম দিকে তিনি মুসাকে নিজের উপরেও স্খান দেন (বুখারী ৪:৬১০)।

তাদেরকে খুশী করার জন্য কুরআনের আয়াতে বলা হল আল্লাহ্ তাদেরকে তাওরাত রূপে “পথ নির্দেশ ও আলো” দান করেছেন (কুরআন- ৫:৪৪)।

ইহুদীরা হল “সৎকর্মপরায়ণ” সম্প্রদায় (কুরআন- ৬:১৫৩-১৫৪)।

“আমি তো বনী ইসরাঈলকে”... “দিয়াছিলাম শ্রেষ্ঠত্ব বিশ্বজগতের উপর” (কুরআন- ৪৫:১৬)।

ইসলামকে যাতে ইব্রাহিমীয় ধর্মের মত দেখা যায় সেই জন্য তিনি এই প্রথম উপবাস, খৎনা, জেরুজালেমের দিকে মুখ করে উপাসনা ইত্যাদি বহু সংখ্যক ইহুদী আচার-অনুষ্ঠান ও রীতিনীতি গ্রহণ করেন। ইহুদীদের প্রতি আল্লাহ্ এবং মুহাম্মদের এইসব ভালো কথাবার্তা এবং ভাবভঙ্গিমার পিছনে কী উদ্দেশ্য ছিল সেটা পরে বেরিয়ে এসেছে। সেটা হচ্ছে ইহুদীদেরও নবী হবার জন্য মুহাম্মদের আকাáক্ষা। সুতরাং পরবর্তী সময়ে আল্লাহ্ বলেন, (কুরআন- ৩:৫০) :

“আর আমি আসিয়াছি আমার সম্মুখে তাওরাতের যাহা রহিয়াছে উহার সমর্থকরূপে ও তোমাদের জন্য যাহা নিষিদ্ধ ছিল উহার কতকগুলিকে বৈধ করিতে। এবং আমি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হইতে তোমাদের নিকট নিদর্শন লইয়া আসিয়াছি। সুতরাং আল্লাহ্কে ভয় কর আর আমাকে অনুসরণ কর।”

একই কথা কুরআন- ৫:৪৮-এও বলা হয়েছে:

“আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি ইহার পূর্বে অবতীর্ণ কিতাবের সমর্থক ও সংরক্ষক রূপে। সুতরাং আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তদনুসারে তুমি তাহাদের বিচার নিষ্পত্তি করিও... ।”

কিন্তু যদি তারা মুহাম্মদকে অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে পরবর্তী আয়াতে (কুরআন- ৫:৪৯) আল্লাহ্ শাস্তির হুমকি দেন:

“... যদি তাহারা মুখ ফিরাইয়া লয় তবে জানিয়া রাখ যে, তাহাদের কোন কোন পাপের জন্য আল্লাহ্ তাহাদিগকে শাস্তি দিতে চাহেন এবং মানুষের মধ্যে অনেকেই তো সত্যত্যাগী।”

প্রথমে আল্লাহ্র সনির্বন্ধ মিনতি এবং পরে শাস্তির হুমকি সত্ত্বেও ইহুদীরা মুহাম্মদকে তাদের নবী হিসাবে গ্রহণ করে নাই। বরং তারা মুহাম্মদ কর্তৃক প্রদত্ত দৈব প্রত্যাদেশের বিরোধীতে পরিণত হল। কারণ তারা জানত তোরা বা তাওরাতের ভিতর কী আছে। কুরআনের মাধ্যমে তাওরাতের সবটা আনা হয়েছে মুহাম্মদের এই কথার ফাঁকি ধরাটা তাদের জন্য কঠিন কিছু ছিল না। মুহাম্মদের বার্তার ভুলগুলোকে তারা খুব সহজেই দেখিয়ে দিতে পারত যা ছিল মুহাম্মদ এবং আল্লাহ্র জন্য খুবই বিব্রতকর।

পরিণতিতে আল্লাহ্ এ বিষয়ে নিশ্চিত হলেন যে, ইহুদী (এবং খ্রীষ্টান)-রা আল্লাহ্র ধর্ম গ্রহণ করবে না। সুতরাং আল্লাহ্ তাদেরকে বুঝাবার দায় থেকে মুক্ত করার জন্য আয়াত নাজিল করলেন (কুরআন- ২:১২০) :

“ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানগণ তোমার প্রতি কখনও সন্তুষ্ট হইবে না, যতক্ষণ না তুমি তাহাদের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহ্র পথনির্দেশই প্রকৃত পথনির্দেশ।’ জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাহাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর তবে আল্লাহ্র বিপক্ষে তোমার কোন অভিভাবক থাকিবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকিবে না।”

মুহাম্মদকে নবী হিসাবে গ্রহণ না করার জন্য মুহাম্মদ কর্তৃক ইহুদীদের ভাগ্য নির্ধারিত হল। আর সেটা হচ্ছে মদীনা থেকে তাদের নিশ্চিহ্নকরণ। শীঘ্রই (জানুয়ারী ৬২৪) মক্কার একটি বাণিজ্য কাফেলাকে আক্রমণ ও লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে যখন মুহাম্মদ তার ৩০০-এর কিছু বেশী মুসলমান অনুসারী নিয়ে অনুসরণ করছিলেন তখন বদরের যুদ্ধে তার বাহিনীর তুলনায় মক্কার দ্বিগুণ অথবা তিনগুণ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন এবং চোখ ধাঁধানো বিজয় লাভ করেন। এতে মুহাম্মদের আত্মবিশ্বাস আকাশ ছোঁয়া হল। এইবার ইহুদীদেরকে মুহাম্মদের ধর্মমত প্রত্যাখ্যান করার জন্য আল্লাহ্র প্রতিশ্রুত শাস্তির সম্মুখীন করার সময় এল; যেমন কুরআন- ৫:৪৯ বলছে :  

“কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি, যাহাতে তুমি আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তদনুযায়ী তাহাদের বিচার নিষ্পত্তি কর, তাহাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ না কর, তাহাদের সম্বন্ধে সতর্ক হও, যাহাতে আল্লাহ্ যাহা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছেন উহারা তাহার কিছু হইতে তোমাকে বিচ্যুত না করে। যদি তাহারা মুখ ফিরাইয়া লয় তবে জানিয়া রাখ যে, তাহাদের কোন কোন পাপের জন্য আল্লাহ্ তাহাদিগকে শাস্তি দিতে চাহেন এবং মানুষের মধ্যে অনেকেই তো সত্যত্যাগী।”

এখন দেখা যাক, ইহুদীদের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ কীভাবে সহিংসতা শুরু করেছিলেন। সে সম্পর্কে নবীর সর্বপ্রথম এবং সর্বাপেক্ষা মৌলিক জীবনীকার ইব্ন ইসহাক বলছেন [Life of Muhammad (c. 750), Karachi, p. 363] :
 

“ইতিমধ্যে বানু কাইনুকার ঘটনা ঘটল। নবী তাদেরকে তাদের বাজারে জমায়েত করলেন এবং তাদেরকে নিম্নবর্ণিত কথা বললেন, ‘হে ইহুদীগণ, ঈশ্বর কুরাইশ (মক্কাবাসী)-দের উপর যে ধরনের প্রতিশোধ নিয়েছিলেন তা থেকে বাঁচতে হলে মুসলমান হয়ে যাও। তোমরা জান যে আমি একজন নবী, যাকে পাঠানো হয়েছে – তোমরা দেখতে পাবে যে এ কথা তোমাদের ধর্মগ্রন্থে আছে এবং তোমাদের সঙ্গে ঈশ্বরের অঙ্গীকার সেখানে পাবে।’ তারা প্রতিউত্তরে বলল, ‘হে মুহাম্মদ, মনে হচ্ছে যে তুমি আমাদেরকে তোমার লোক মনে করছ। নিজেকে ফাঁকি দিও না, কারণ তুমি যাদেরকে (কুরাইশ) মোকাবিলা করেছিলে তাদের যুদ্ধ সম্পর্কে কোন জ্ঞান ছিল না এবং তাদেরকে পরাস্ত করেছিলে; কিন্তু ঈশ্বরের নামে বলছি আমরা যদি তোমার বিরুদ্ধে লড়াই করি তাহলে তুমি দেখতে পাবে যে আমরা হচ্ছি প্রকৃত পুরুষ।”

এখানে মুহাম্মদ ইহুদীদেরকে ইসলাম (অর্থাৎ তার ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব) গ্রহণ করতে বাধ্য করার জন্য হুমকি দেন। ইসলাম গ্রহণ না করলে তাদের ভাগ্যে কী আছে সে কথাও তিনি বদরের যুদ্ধে মক্কাবাসীদের কী অবস্খা হয়েছিল সেটার উল্লেখ করে বুঝিয়ে দিলেন। কিন্তু ইহুদীরা এই ভীতি প্রদর্শনমূলক আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করে এ কথা বলে দিল যে যদি মুহাম্মদ তাদেরকে আঘাত করে তবে তারা প্রত্যাঘাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

মুহাম্মদের হুমকির পর আল্লাহ্ নিজেই কীভাবে ইহুদীদেরকে হুমকি দিতে এগিয়ে এলেন সে কথা ইব্ন ইসহাক (পৃ: ৩৬৩) উল্লেখ করেছেন:

“ইব্ন আব্বাস থেকে ত্ক্রিমা অথবা সাঈদ বিন জুবাইর থেকে যাইদ বিন থাবিতের পরিবারের একজন মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি আমাকে বলেছিলেন যে পরবর্তী জন বলেছেন নিম্নলিখিত আয়াত দুইটি (কুরআন- ৩:১২-১৩) তাদের সম্পর্কে নাজিল হয়েছিল :

“১২। যারা কুফরী করে তাহাদিগকে বল, ‘তোমরা শীঘ্রই পরাভূত হইবে এবং তোমাদিগকে একত্রিত করিয়া জাহান্নামের দিকে লইয়া যাওয়া হইবে। আর উহা কত নিকৃষ্ট আবাসস্খল!”

“১৩। দুইটি দলের (বদরের যুদ্ধে) পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে তোমাদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে। একদল আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করিতেছিল, অন্যদল কাফির ছিল; উহারা তাহাদিগকে (এ স্খলে উহারা অর্থ কাফিরগণ ও তাহাদিগকে অর্থ মুসলমানগণ।) চোখের দেখায় দ্বিগুণ দেখিতেছিল। আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা নিজ সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করেন। নিশ্চয় ইহাতে অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন লোকের জন্য শিক্ষা রহিয়াছে।”

যেহেতু বানু কাইনুকা ইহুদীরা উভয় হুমকিকেই সরাসরি প্রত্যাখ্যান  করল সেহেতু মুহাম্মদ এখন হুমকিকে কাজে রূপ দিবার জন্য ছুতা খুঁজছিলেন। মনে হয় মুহাম্মদ এমন কোন ছুতাই খুঁজে পাচ্ছিলেন না যাতে ইহুদীদেরকে আক্রমণ করা যায়। সুতরাং ৮:৫৫-৫৮ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্কে মুহাম্মদের জন্য সাংঘাতিক রকম অযৌক্তিক ছুতার মাধ্যমে আক্রমণের সুযোগ তৈরী করে দিতে হল। মুহাম্মদকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য ইহুদীরা হঠাৎ করে নিকৃষ্ট পশুতে পরিণত হল:  

“আল্লাহর নিকট নিকৃষ্ট জীব তাহারাই যাহারা কুফরী করে এবং ঈমান আনে না।” (কুরআন- ৮:৫৫)

কী শাস্তি তাদের প্রাপ্য? এ সম্পর্কে পূর্ববর্তী আয়াতে (কুরআন- ৮:৫৪) বলা হয়েছে :

“ফিরআওনের স্বজন ও তাহাদের পূর্ববর্তীগণের অভ্যাসের ন্যায় ইহারা ইহাদের প্রতিপালকের নিদর্শনকে অস্বীকার করে। তাহাদের পাপের জন্য আমি তাহাদিগকে ধ্বংস করিয়াছি এবং ফিরআওনের স্বজনকে নিমজ্জিত করিয়াছি এবং তাহারা সকলেই ছিল যালিম।”

মুসাকে অস্বীকার করার জন্য ফারাও যে শাস্তি ভোগ করেছিলেন (অর্থাৎ সম্পূর্ণ ধ্বংস) মুহাম্মদকে অস্বীকার করার জন্য ইহুদীদেরও একই ধরনের শাস্তি প্রাপ্য। ইহুদীদেরকে আক্রমণ করার ছুতা বানাবার জন্য ৮:৫৬ আয়াতে আল্লাহ্ চুক্তি ভঙ্গের জন্য বানু কাইনুকা উপজাতিকে মিথ্যাভাবে অভিযুক্ত করলেন :

“উহাদের মধ্যে তুমি যাহাদের সহিত চুক্তিতে আবদ্ধ তাহারা প্রত্যেক বার তাহাদের চুক্তি ভঙ্গ করে এবং তাহারা সাবধান হয় না।” (কুরআন- ৮:৫৬)

এখানে আল্লাহ্ বলছেন যে, মুহাম্মদ মদীনার ইহুদীদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলেন সেটা তারা বারবার ভঙ্গ করেছিল। এই আয়াতে আল্লাহ্ দুইবার মিথ্যাচার করেছেন : (১) মুহাম্মদ এবং ইহুদীদের মধ্যে এই ধরনের কোন চুক্তির অস্তিত্বই ছিল না; (২) যদি এটা থেকেও ছিল তবু ইহুদীরা এটা কখনই ভঙ্গ করে নাই। নীচে ব্যাপারটা পরিষ্কার করা হবে।

(১) মুহাম্মদ এবং ইহুদীদের মধ্যে কি কোন চুক্তির অস্তিত্ব ছিল?

ইহুদী এবং মুহাম্মদের মধ্যে উভয় পক্ষ কর্তৃক স্বাক্ষরিত কোন চুক্তি যে ছিল না সে সম্পর্কে নিম্নে আলোকপাত করা হবে।

মুহাম্মদ এবং ইহুদীদের চুক্তির অস্তিত্বকে মুসলমানরা তথাকথিত  “মদীনার সংবিধান” হিসাবে দেখাতে চায় (ওদষ ওঢ়ভথক্ষ, হ. ২৩১-২৩২)। মুসলমানরা এই তথাকথিত চুক্তি নিয়ে গর্ব করে। এটা তাদের কাছে ইসলামী রাষ্ট্রের “আদর্শ নীলনকশা”, যাতে ফুটে উঠেছে ইসলামী রাষ্ট্রে সকল বিশ্বাসের মানুষের জন্য সহিষäুতা, স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং ন্যায় বিচারের মর্মবাণী। এই চুক্তিটি মদীনায় মুহাম্মদের অভিবাসনের এক বছর সময়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং এই চুক্তি দ্বারা প্রকৃতপক্ষে মদীনায় নূতন উদ্বাস্তু মুহাম্মদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কর্তৃত্বের নিকট সকল মদীনাবাসীর শর্তহীন অধীনস্খতা দাবী করা হয়। আমি প্রমাণ করব যে, এই চুক্তিতে ইহুদীরা কখনই স্বাক্ষর করে নাই এবং সম্ভবত এটা তারা কখনই দেখেও নাই।

এই চুক্তির কথাগুলি এইভাবে শরু হয়েছিল : “করুণাময়, দয়ালু ঈশ্বরের নামে । এটি হচ্ছে  ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ (নবী) মুহাম্মদ হতে কুরাইশ ও ইয়াথরিবের (মদীনা) বিশ্বাসী ও মুসলমানদের, এবং যারা তাদেরকে অনুসরণ করেছিল এবং তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে শ্রম দিয়েছিল তাদের মধ্যকার দলিল।”

এবং এটা শেষ হয়েছিল এই কথাগুলো দিয়ে : “ঈশ্বর এই দলিলকে অনুমোদন করেন।... মুহাম্মদ ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ (অর্থাৎ নবী)।”

আল্লাহ্ এবং মুহাম্মদ উভয়ের যেসব কথা উপরে বলা হয়েছে তা থেকে সন্দেহাতীতভাবে এই সত্য বেরিয়ে আসে যে, ইহুদীরা কখনই ইসলাম গ্রহণ করতে এবং মুহাম্মদের নেতৃত্বের নিকট নিজেদেরকে সমর্পণ করতে পারত না এবং কখনই তারা মুহাম্মদকে একজন নবী হিসাবে গ্রহণ করতে পারত না।

তাহলে এটা কীভাবে সম্ভব যে, যেখানে দুইবার বলা হয়েছে এই দলিল ঈশ্বরের  প্রেরিত পুরুষ বা নবী মুহাম্মদ হতে সেই দলিলে ইহুদীরা স্বাক্ষর দিবে?

এই দলিলে সই করার অর্থ হচ্ছে ইহুদীরা মুহাম্মদের নবীত্বকে মেনে নিয়েছে। অথচ তারা লাগাতারভাবে সব সময়েই এই দাবীকে প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, মুহাম্মদের এই দাবী ছিল তাদের কাছে তামাশার বিষয়। এমনকি মুহাম্মদের হাতে ভয়ঙ্করভাবে নির্যাতিত হওয়া সত্ত্বেও তারা কখনই মুহাম্মদকে নবী হিসাবে স্বীকার করে নাই। অতএব এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ইহুদীরা কখনই এই দলিলে স্বাক্ষর করতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে মন্ট্গোমারী ওয়াট-এর মতে (মুসলমানদের প্রিয় পাশ্চাত্য পণ্ডিত, যার বিভিন্ন বই পাকিস্তানে প্রকাশিত হয়েছে) : “এই দলিলে নয়টি চুক্তিবদ্ধ পক্ষ ছিল; তারা ছিল মক্কার মুসলিম উদ্বাস্তু এবং নূতন মুসলমান আরব উপজাতিসমূহ (অ-ইহুদী), যারা মুহাম্মদ কর্তৃক মদীনায় আগমনের পর ব্যাপক সংখ্যায় ইসলাম গ্রহণ করেছিল। কোন ইহুদী উপজাতি এই দলিলে স্বাক্ষর করে নাই।” (Watt M, Islam and the Integration of Society, 1961, p.19)

এই চুক্তির কথা দ্বারা এটা স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, এটা ছিল ইহুদীসহ মদীনার অন্য সকল উপজাতির প্রতি মুহাম্মদের অধীনে সমবেত হওয়ার এবং তার আদেশ অনুসরণ করে চলার জন্য মুহাম্মদের আমন্ত্রণ। এটা রচনায় ইহুদীদের কোন অংশ বা ভূমিকাই ছিল না। খুব সম্ভবত এটা ছিল মুহাম্মদ এবং মদীনার মূর্তি উপাসক থেকে মুসলমানে পরিণত হওয়া উপজাতিগুলির মধ্যকার গোপন সমঝোতার দলিল যে উপজাতিগুলির ইহুদী উপজাতিগুলির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে মৈত্রী ছিল। আর এই উপজাতিগুলির সঙ্গে ইহুদী উপজাতিগুলির পূর্ব থেকেই আনুষ্ঠানিক মৈত্রী থাকলেও তারা সম্ভবত কখনই এই দলিল চোখে দেখে নাই।

(২) ইহুদীরা কি কোন চুক্তি ভঙ্গ করেছিল?

যদি কোন চুক্তি থেকেও থাকে তবুও ইহুদীরা এটা কখনও ভাঙ্গে নাই। আল্লাহ্ যেভাবে বারংবার চুক্তিভঙ্গের জন্য ইহুদীদের প্রতি দোষারোপ করছেন সেভাবে বারংবার তো দূরের কথা একবারও তারা চুক্তি ভঙ্গ করে নাই। ইহুদীদেরকে আক্রমণ করার জন্য আল্লাহ্ মুহাম্মদকে যে আয়াত দ্বারা নির্দেশ করেছিলেন সেটা থেকেই এটা স্পষ্ট (কুরআন- ৮:৫৮) :

“যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের চুক্তি ভঙ্গের আশঙ্কা কর তবে তোমার চুক্তিও তুমি যথাযথ বাতিল করিবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ চুক্তি ভঙ্গকারীদিগকে পছন্দ করেন না।”

এই আয়াত হচ্ছে বানু কাইনুকা উপজাতিকে আক্রমণের জন্য আল্লাহর সরাসরি আদেশ। প্রথম যে ইহুদী উপজাতির উপর মুহাম্মদের তরবারি নেমে এসেছিল তারা হল বানু কাইনুকা উপজাতি। আল-তাবারি কর্তৃক উদ্ধৃত আল-জুহ্রির বিবরণ অনুযায়ী ফেরেশতা জিবরাইল মুহাম্মদের নিকট একটি আয়াত আনয়ন করেন, যাতে বলা হয়েছে  (History of Al-Tabari, New York, V11:86):

“যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের চুক্তি ভঙ্গের আশঙ্কা কর তবে তোমার চুক্তিও তুমি যথাযথ বাতিল করিবে’ (কুরআন- ৮:৫৮)। যার ফলে মুহাম্মদ বললেন, ‘আমি বানু কাইনুকাকে ভয় করি’ এবং ‘ঈশ্বরের বার্তাবাহক তাদেরকে আক্রমণ করেন।”

এই আয়াত থেকে এটা পরিষ্কার যে, আল্লাহ্ যেহেতু মুহাম্মদের এই ভয়ের উল্লেখ করছেন যে চুক্তি ভঙ্গ হতে পারে সেহেতু তিনি বানু কাইনুকাকে আক্রমণ করার নির্দেশ দিচ্ছেন। পূর্ববর্তী আয়াতে আল্লাহ্ যেভাবে বলেছিলেন যে অনেকবার ইহুদীরা চুক্তি ভঙ্গ করেছিল সেই অনেকবার তো দূরের কথা তখন পর্যন্ত তারা একবারও চুক্তি ভঙ্গ করে নাই।

বস্তুত ইহুদীদেরকে কেন আক্রমণ করতে হবে সেটা পরিষ্কার হয় পরবর্তী আয়াত দ্বারা (কুরআন- ৮:৫৯) :

“কাফিরগণ কখনও মনে না করে যে, তাহারা পরিত্রাণ পাইয়াছে; নিশ্চয়ই তাহারা মুমিনগণকে হতবল করিতে পারিবে না।”

স্পষ্টতই ইহুদীরা আল্লাহ্র পরিকল্পনাকে বানচালের চেষ্টা করছিল। মুহাম্মদের মাধ্যমে পাঠানো ওহীর উপর ইহুদীদের আস্খা সৃষ্টির জন্য আল্লাহ্ ইহুদীদের নিকট বহু আয়াতের মাধ্যমে সনির্বন্ধ মিনতি করেছিলেন। কিন্তু ইহুদীরা মুহাম্মদের মাধ্যমে প্রেরিত আল্লাহ্র এইসব আবেদন-নিবেদন প্রত্যাখ্যান করেই ক্ষান্ত হয় নাই, উপরন্তু তারা এগুলি নিয়ে তামাশাও করত। ইহুদীরা এই সকল ওহীর মধ্যে এতসব অসঙ্গতি ও ত্রুটি খুঁজে পেত যা আল্লাহ্-মুহাম্মদ উভয়ের জন্য ছিল বিব্রতকর।

তাদের কতখানি স্পর্ধা! এই রকম এক বিরাট অপরাধের জন্য তাদের ভয়ঙ্কর শাস্তি হওয়া উচিত। আল্লাহ্ হুকুম দিলেন, তাদেরকে রেহাই পেতে দেওয়া যাবে না।

সংক্ষেপে, মুহাম্মদ ইহুদীদেরকে এই জন্য আক্রমণ করেন নাই যে, তারা ইতিপূর্বে চুক্তি ভঙ্গ করেছিল, বরং এই আশঙ্কা থেকে আক্রমণ করেছিলেন যে, বানু কাইনুকা উপজাতি ভবিষ্যতে কোন সময় চুক্তি ভঙ্গ করতে পারে। এই ভয় থেকে মুহাম্মদ বানু কাইনুকা উপজাতিকে অবরোধ করেন। পনের দিন অবরোধের পর ইহুদীরা আত্মসমর্পণ করল। কুরআনের ৫:৪৯ আয়াতে আল্লাহ্ তাদেরকে শাস্তি দিবার এবং ৮:৫৪ আয়াতে তাদেরকে ফারাওয়ের ন্যায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী শাস্তি দানের উদ্দেশ্যে মুহাম্মদ আত্মসমর্পিত ইহুদী পুরুষদেরকে দ্রুত হত্যার জন্য বেঁধে ফেলেন। এই পর্যায়ে ইসলামে মুনাফিক হিসাবে নিন্দিত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উবাইয়ী দৃঢ়ভাবে হস্তক্ষেপ করেন। তিনি ছিলেন খাযরাজ গোত্রের প্রধান, যিনি ইসলাম গ্রহণ করলেও ছিলেন মানবিক হৃদয়ের অধিকারী। এমনকি তিনি মুহাম্মদকে এই বলে হুমকি দেন যে, ইহুদীদেরকে হত্যা করলে তার ফল মোটেই ভাল হবে না। এর ফলে মুহাম্মদ বিচক্ষণতার সঙ্গে বন্দীদের হত্যা করা থেকে বিরত হলেন। হত্যার পরিবর্তে মুহাম্মদ তাদেরকে সিরিয়ায় নির্বাসিত করেন  (Ibn Ishaq, p. 363-64) ।

আরেকটি হাদীসে ইহুদীদের বিরুদ্ধে হুমকির স্পষ্ট বিবরণ দেওয়া হয়েছে (বুখারী ৯:৮৫:৭৭) :

“আবু হুরাইরা বর্ণনা করছেন : আমরা যখন মসজিদে ছিলাম তখন আল্লাহ্র নবী (মুহাম্মদ) আমাদের কাছে এসে বললেন, ‘চলো, ইহুদীদের দিকে অগ্রসর হই।’ সুতরাং আমরা তার সঙ্গে বায়িত-আল-মিদরাস-এ (যেখানে তাওরাত পাঠ করা হত এবং সকল ইহুদী একত্র হত) গেলাম। নবী তাদের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘হে সমবেত ইহুদীগণ! ইসলাম গ্রহণ কর এবং তোমরা নিরাপদ হবে।’ ইহুদীরা উত্তর দিল, ‘হে মুহাম্মদ, আল্লাহ্র বার্তা আমাদেরকে জানিয়েছ।’ নবী বললেন, ‘আমি এটাই চাই (তোমাদের কাছ থেকে)।’ তিনি দ্বিতীয়বার প্রথমটি কথাটিই আবার বললেন, এবং তারা বলল, ‘তুমি আল্লাহ্র বার্তা আমাদেরকে জানিয়েছ, হে মুহাম্মদ।’ তিনি তখন তৃতীয়বারের মত এই কথাটি আবার বললেন এবং এর সঙ্গে যুক্ত করলেন, ‘তোমাদের জানা উচিত যে এই পৃথিবী আল্লাহ্ এবং নবীর। আমি তোমাদেরকে এই ভূমি থেকে নির্বাসন দিতে চাই। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাদের কিছু সম্পত্তি আছে তোমরা তা বিক্রি করতে পার, অন্যথায় তোমাদের জানা উচিত যে পৃথিবী হচ্ছে আল্লাহ্ এবং তার নবীর।”

এই আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার হয় যে, ইহুদীরা কখনই কোন সময়ের জন্য প্রথমে কোন মুসলমানকে আক্রমণ করে নাই। যেভাবে মুসলমানরা দাবী করে যে, মুহাম্মদ আত্মরক্ষার জন্য ইহুদীদেরকে আক্রমণ ও উচ্ছেদ করতে বাধ্য হয়েছিলেন সেটা মোটেই সত্য নয়। মুসলমানরা অতি সাধারণ যুক্তি হিসাবে যে চুক্তিভঙ্গের কথা বলে সেই ধরনের কোন কাজও ইহুদীরা কখনই করে নাই। এমনকি সম্ভবত চুক্তিটির অস্তিত্বই কখনও ছিল না। কাজেই ইহুদীদেরকে আক্রমণ করার পিছনে মুহাম্মদের কোন যৌক্তিকতাই ছিল না। ইহুদীদের উপর মুহাম্মদের আক্রমণ, তাদের উৎসাদন এবং এমনকি পাইকারী হত্যা ও দাসকরণ ছিল ইতিহাসের অসমর্থনীয় চরমতম বর্বরতার এক দৃষ্টান্ত।

 

(নিবন্ধটি   M. A. Khan-এর  Did Muhammad Evict the Jews of Medina for Attacking and Killing Muslims?-এর বাংলায় ভাষান্তর। ইংরাজী নিবন্ধটি লেখক কর্তৃক ইসলাম ওয়াচ (http://www.islam-watch.org)-এ তিন সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত নিবন্ধের সংক্ষেপিত ও পরিমার্জিত রূপ যা লেখক অনুবাদের জন্য বঙ্গরাষ্ট্র-এ পাঠান। এম, এ, খান Islamic Jihad: A Legacy of Forced Conversion, Imperialism and Slavery নামক গ্রন্থের লেখক। কুরআনের আয়াতগুলির বাংলা অনুবাদ লেখকের ইংরাজী অনুবাদ থেকে না করে “ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ” কৃত বঙ্গানুবাদ “আল-কুরআনুল করীম” থেকে নেওয়া হয়েছে। --­ বঙ্গরাষ্ট্র)

অনলাইন : ১৬  অক্টোবর, ২০০৯

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Archive
 
সাম্প্রতিক পোষ্টসমূহ