Banner
ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোয় জীবন্ত দগ্ধ খ্রীষ্টান স্বামী, ধর্ষিত স্ত্রী : নবীর পন্থা অনুসরণ -- এম, এ, খান

লিখেছেনঃ এম, এ, খান , আপডেটঃ April 29, 2010, 12:00 AM, Hits: 1617


যারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাতেন আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করে মুহাম্মদ তাদেরকে বধ করতেন এবং তাদের নারীদেরকে বন্দী এবং ধর্ষণ করতেন। নবীর আচরিত এই কর্মপদ্ধতি আজ অবধি ইসলামের ইতিহাসে বাস্তবায়িত হয়ে চলেছে। পাকিস্তানেও অতি সম্প্রতি আমরা এ রকম একটি ঘটনা দেখি।    


 
ইতিহাসে তুলনা নাই এমন এক বর্বর হচ্ছেন নবী মুহাম্মদ, যিনি হিটলারের চেয়েও নিকৃষ্ট। তবে তিনি তার বর্বর উদ্দেশ্য চরিতার্থ  করেছিলেন মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার পবিত্র অনুমোদনের আবরণ দিয়ে। মুহাম্মদ যে পদ্ধতিতে সন্ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন সম্ভবত ইতিহাসে আর কেউ অন্তত এত সফলভাবে সেই পদ্ধতিতে সেটা করতে পারেন নাই।  

 যারা মুহাম্মদের রাজপথে দস্যুবৃত্তি এবং আশেপাশের জনগোষ্ঠীসমূহের উপর আক্রমণ ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে যৌনদাসীসহ লুণ্ঠনলব্ধ সম্পদে (মালে গানীমত) তাকে সমৃদ্ধ করার জন্য তার ধর্ম তথা ইসলামে যোগ দেন নাই, মুহাম্মদ তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে চেষ্টা করেছিলেন যাতে করে তিনি তাদের সম্পত্তি এবং নারীদেরকে  (এবং শিশুদেরকে) কব্জা করতে পারেন।
 
মদীনার ইহুদীদের ক্ষেত্রে ঠিক এই ঘটনাটি ঘটেছিল। ইসলামের সকল ইতিহাস এবং হাদীস গ্রন্থ আমাদেরকে জানায় যে, যখন তারা মুহাম্মদের কথিত স্বর্গীয় অলীক দেবতায় বিশ্বাস স্খাপন করতে অস্বীকার করেছিল তখন তিনি তাদেরকে আক্রমণ করেন, এবং তিনি তাদেরকে পাইকারী হারে হত্যা করতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইসলামের সবচেয়ে বড় মুনাফিক ক্ষমতাশালী আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই-এর বলিষ্ঠ হস্তক্ষেপের কারণে তিনি বানু কাইনুকা এবং নাদির-এর ইহুদীদের হত্যা করতে ব্যর্থ হন। এই অবস্খায় শুধু মাত্র তাদের সম্পত্তি দখল এবং তাদেরকে মদীনা থেকে বিতাড়িত করে মুহাম্মদকে তুষ্ট থাকতে হয়।  
যে সব মুসলমান কুরআন ছাড়া আর কোন উৎসের উল্লেখ গ্রহণ করে না সে ধরনের শুধু কুরআন-মানা মুসলমানদের নিকট মুহাম্মদের এই কাজ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ কর্তৃক অনুমোদিত; আরও ভালোভাবে বললে বলতে হয় যে, এটা হচ্ছে আল্লাহর আদেশ, যা মুহাম্মদ কার্যকর করেছিলেন। বানু নাদির উপজাতির উপর আক্রমণ এবং তাদের হত্যায় ব্যর্থ হয়ে তাদেরকে বহিষ্কারের পর এ সম্পর্কে আল্লাহ এ কথাই বলেন :
 
‘আল্লাহ তাদের নির্বাসনের হুকুম দিয়েছিলেন.......  কারণ তারা আল্লাহ এবং তার বার্তা বাহককে প্রত্যাখ্যান করেছিল (অর্থাৎ ইসলামকে প্রত্যাখান করেছিল);  এবং যদি কেউ আল্লাহ এবং তার বার্তা বাহককে বিরোধিতা করে তবে শাস্তি প্রদানে আল্লাহ নিশ্চয় কঠোর।’  (কুরআন : ৫৯: ৩-৪)  

 অবশ্য দুই বছর পর মুহাম্মদ ইসলাম প্রত্যাখ্যানের জন্য ইহুদীদের  শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে তার ( আল্লাহর) মূল পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেন। এবার তিনি মদীনার সর্বশেষ থেকে যাওয়া ইহুদী উপজাতি বানু কুরাইযাকে আক্রমণ করলেন। ততদিনে আব্দুল্লাহ ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েছিলেন এবং তখন তিনি মৃত্যু পথযাত্রী। মুহাম্মদ কুরাইযা উপজাতির সকল প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে হত্যা করলেন, তাদের নারী এবং শিশুদেরকে দাস করলেন, এবং তাদের সকল সম্পত্তি দখল করলেন। আর কোন ক্ষমতাশালী আব্দুল্লাহর বিরোধিতা না থাকায় এর পর তিনি একই রকম বর্বর পদ্ধতিতে বানু মুস্তালিক এবং খাইবারের ইহুদী সমস্যারও সমাধান করলেন।
 
মুহাম্মদের এই কার্যপ্রণালী, যা কিনা একটি সুন্নৎ এবং পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত আদর্শগতভাবে মুসলমানদের জন্য অবশ্য পালনীয়, তা আজ অবধি ইসলামের ইতিহাসে বলবৎ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ‘ইসলামী জিহাদ : জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ এবং দাসত্বের উত্তরাধিকার (Islamic Jihad: A Legacy of Forced Conversion, Imperialism and Slavery) নামক আমার লেখা বইটিতে আলোচনা করেছি। আমরা জানি, সরকারের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও পাকিস্তানে তালেবানরা কীভাবে ইসলামের এই চিরন্তন এবং স্বর্গীয় কার্যপ্রণালী সেখানকার খ্রীষ্টান, শিখ এবং হিন্দুদের উপর প্রায়শই সফলভাবে প্রয়োগ করেছে।

 
ইসলাম গ্রহণ না করায় খ্রীষ্টান পুরুষ নিহত এবং স্ত্রী ধর্ষিত

 শেষ ঘটনা অনুযায়ী ইসলাম গ্রহণে আপত্তি করায় একজন খ্রীষ্টান পুরুষকে অগ্নিদগ্ধ করা হয় এবং সেই সঙ্গে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনাটি তালেবান অধ্যুষিত এলাকার প্রাণ কেন্দ্রে ঘটে নাই, এটি ঘটেছে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের নিকটবর্তী অপেক্ষাকৃত নিরাপদ রাওয়ালপিন্ডিতে। এটি ঘটিয়েছে দুর্বৃত্ত তালেবানরা নয়, বরং সম্ভবত মধ্যপন্থী মুসলমান এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, যাকে সাহায্য করেছে পুলিশ। বস্নিউজলাইফ (BosNewsLife)-এর ভাষ্য অনুযায়ী ২০১০-এর ১৯ মার্চ তারিখে ইসলাম গ্রহণ না করায় মুসলিম নেতারা জনৈক খ্রীষ্টানকে যখন অগ্নিদগ্ধ করছিল সেই সময় পুলিশ কর্মকর্তারাও তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করছিল।

মুহাম্মদ বানু কুরাইযা, খাইবার, এবং মুস্তালিক-এর পুরুষদেরকে হত্যা করেছিলেন এবং তাদের নারীদেরকে যৌন দাসী হিসাবে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে বন্দী করেছিলেন। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা আজও সমান তালে চলছে। ১৯ মার্চ তারিখে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর একটি পুলিশ থানার সামনে খ্রীষ্টান আর্শেদ মসিহ্-এর শরীরে যখন অগুন দেওয়া হয় তখন তার স্ত্রী মার্থা আর্শেদকে ধর্ষণে একদল পুলিশ কর্মকর্তাও যোগ দেয়।
 
এই বর্বর ঘটনার পূর্বে আর্শেদ যে কর্মকর্তার অধীনে চাকুরী করতেন সেই শেখ মুহাম্মদ সুলতান তাকে মৃত্যুর হুমকি দিয়েছিলেন। সুলতান ছিলেন একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও ধর্মীয় নেতা।

খ্রীষ্টান দম্পতির তিন সন্তান, যাদের বয়স ৭ থেকে ১২-এর মধ্যে। ঘটনার বর্ণনা অনুযায়ী তাদের পিতামাতার উপর সংঘটিত এই বর্বরতার দৃশ্য তাদেরকে দেখতে বাধ্য করা হয়।   
 
শরীরের ৮০শতাংশ অগ্নিদগ্ধ আর্শেদ মসিহ্ হাসপাতালে তার জীবনের জন্য লড়াই করছেন।  

শনিবার বিকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার না করা হলেও পুলিশ জানিয়েছে যে মামলার তদন্ত চলছে।  

২০০৫ সাল থেকে আর্শেদ মসিহ্ ব্যবসায়ী সুলতানের একজন  ড্রাইভার হিসাবে চাকুরী করছিলেন; একই সময়ে তার স্ত্রী সুলতানের গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করছিলেন। তাদের সন্তানদেরকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী সুলতানের বাসগৃহে বাস করছিলেন।

 কথিত যে, স্থানীয় ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে সুলতান আর্শেদকে সপরিবারে ইসলামে দীক্ষিত হতে বলেন।

যখন তিনি প্রত্যাখ্যান করেন তখন সুলতান তাকে এর ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে প্রস্তুত থাকতে বলেন।

আর্শেদ তার চাকুরী ছাড়ার প্রস্তাব দিলে সুলতান তাকে হত্যা করার হুমকি দেন। অন্য খ্রীষ্টানরা মধ্যস্থতা করতে এলে তিনি তাদেরকে সাফ জানিয়ে দেন যে পাকিস্তানের কোথাও আর্শেদের পরিবারকে বাঁচতে দেওয়া হবে না।
 
আগুনে পোড়ানো এবং ধর্ষণের ঘটনার পূর্বে সুলতান থানায় তার একাউন্ট থেকে ৫ লাখ রুপি (৫,৯৫২ ডলার) চুরির একটি এফ,আই,আর, দায়ের  করেন।  
 
সুলতান তাদেরকে এই প্রস্তাব দেন যে, যদি তারা ইসলামে ধর্মান্তরিত হয় তবে এই মামলা তিনি প্রত্যাহার করে নিবেন। তিনি তাদেরকে এই হুমকিও দেন যে যদি তারা তার কথা না শুনেন তবে তারা কখনও তাদের সন্তানদেরকে দেখতে পাবেন না।

 যখন এর পরেও আর্শেদ ধর্মান্তরিত হতে অস্বীকার করেন তখন মুহাম্মদের বর্বর সুন্নৎ কার্যকর হয় : পুলিশের সাহায্যে সুলতান এবং অন্যান্য স্থানীয় নেতা আর্শেদকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে এবং তার স্ত্রীকে ধর্ষণ  করে এবং এই সমস্ত ঘটনা দেখতে তাদের সন্তানদেরকে বাধ্য করে।

  
(M. A. Khan-এর লেখা  Christian Burned Alive, Wife Raped, for Refusing to Convert to Islam: Emulating Islam’s Barbarous Prophet নামক ইংরাজী নিবন্ধটি ইসলাম ওয়াচ [www.islam-watch.org]-এ ২২ মার্চ, ২০১০ তারিখে প্রকাশিত হয়। এটি তার বাংলায় ভাষান্তর। এম, এ, খান ওয়েব সাইট ‘ইসলাম ওয়াচ’-এর সম্পাদক এবং Islamic Jihad: A Legacy of Forced Conversion, Imperialism and Slavery নামক গ্রন্থের লেখক। -- বঙ্গরাষ্ট্র)

 
অনলাইন : ২৯ এপ্রিল, ২০১০

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Archive
 
সাম্প্রতিক পোষ্টসমূহ