Banner
ইসলাম : নিপীড়ন, সহিংসতা এবং ধর্মোন্মত্ততার উত্তরাধিকার – ড: সামি আলরবা

লিখেছেনঃ ড: সামি আলরবা, আপডেটঃ August 26, 2009, 12:00 AM, Hits: 962


  মুসলিম সমাজসমূহের কল্যাণের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং অর্থনৈতিক সংস্কার। মুসলিম সমাজসমূহে সহিংসতা, দমন এবং বঞ্চনার যে ঐতিহাসিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে এই সংস্কার সেগুলি থেকে নারীসহ ব্যক্তিকে যেমন মুক্ত করবে তেমন সবার জন্য সম্ভাবনার দরজা উন্মুক্ত করবে। কিন্তু সেটা কি হবে? আমি খুব একটা আশাবাদী নই।

 আপনি কি কখনও এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন : আজ অবধি বিশ্ব সভ্যতায় ইসলাম এবং মুসলমানরা কী অবদান রেখেছে? উত্তরটা খুব স্পষ্ট এবং সোজা : নিপীড়ন, সহিংসতা, বৈষম্য এবং ধর্মোন্মত্ততা। জন্ম থেকেই এই অনৈতিক মূল্যবোধগুলি ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
 
তার প্রমাণ দিচ্ছি। মুসলমানদের নেতা মুহাম্মদ দাবী করেছিলেন যে তিনি “নবী” এবং আল্লাহ্র নামে তিনি তার অনুসারীদেরকে “অবিশ্বাসী”, অ-মুসলমান, বিশেষ করে ইহুদী এবং খ্রীষ্টানদেরকে হত্যা করতে বলেছিলেন।

 মূসা এবং যীশুর অনুসারীদের ত্যাগের মাধ্যমে ইহুদী ও খ্রীষ্ট ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে প্রসার লাভ করেছিল। অথচ ইসলাম প্রসারিত হয়েছিল তলোয়ারের ভয় দেখিয়ে : “ইসলামের নিকট আত্মসমর্পণ করো, নতুবা তোমাদেরকে হত্যা করা হবে।” ইসলাম অমুসলিমদেরকে আল্লাহ্ শত্রু হিসাবে পরিগণিত করে। বিস্তারিত জানার জন্য আলী সিনা-এর গ্রন্থ Understanding Muhammad (মুহাম্মদকে বুঝা) পড়ুন।
 
আল্লাহ্ নামে মুহাম্মদ তার অনুসারীদেরকে সমগ্র পৃথিবী জয় করে সকল মানুষকে মুসলিমে পরিণত হতে বাধ্য করার জন্য তাগাদাও দিলেন। মুসলিমরা এগুলিকে বলে “ফুতুহাত” (উম্মোচন)। “উপনিবেশবাদের” তুলনায় মুসলিম বিজয় ছিল অনেক বেশী নিকৃষ্ট এবং রক্তাক্ত। ব্রিটিশ এবং ফরাসী উপনিবেশবাদীরা কখনই স্থানীয় জনগণকে তাদের নিজস্ব বিশ্বাস ত্যাগ করার জন্য বাধ্য করে নাই। বিস্তারিত জানার জন্য এম, এ, খানের ওঢ়লথশমধ ঔমভথন (ইসলামী জিহাদ) পড়ুন।
 
মুহাম্মদের মৃত্যুর পর তার সমকালীন একনিষ্ঠ অনুসারীদের মধ্য থেকে যে চারজনকে মুসলিমরা আল খুলাফা আল-রাশিদুন (সঠিকভাবে পরিচালিত উত্তরাধিকারী) বলে তারা খলীফা হিসাবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। উদীয়মান মুসলিম সাম্রাজ্যের নেতৃত্বের জন্য ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে আবু বকর, ওমর, ওসমান এবং আলী এই চারজনই খুন হন।

 রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর পৃথিবীতে ক্ষমতার যে শূন্যতা সৃষ্টি হয় তার সুযোগ নিয়ে মুসলিমরা পৃথিবীর এক বিরাট অংশ দখলের অভিযান শুরু করে। তারা দখল করে মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফিন্সকা, স্পেন, ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, কাজাখস্তান, আজারবাইজান (এবং মধ্য এশিয়ার অন্যান অঞ্চল), ভারতের বিভিন্ন অংশ, বাংলাদেশ, চীনের কিছু অংশ এবং মালয়েশিয়া  ও ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত এক বিশাল ভূভাগ।
 
দ্বিতীয় খলীফা ওমর ইবনে আল-খাত্তাব তার সৈন্যরা মিসর জয় করার পর সে দেশ দেখতে যান। তিনি আলেকজান্দ্রিয়ার তৎকালীন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে মূল্যবান গ্রন্থাগারের সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করেন, “এটা কী?” তাকে বলা হল যে, এটা হচ্ছে একটা গ্রন্থাগার। তিনি বললেন, “কোরানে যে কথা বলা হয়েছে সে কথা যদি এর বইগুলোতেও বলা থাকে তবে এগুলোর কোন প্রয়োজন নাই। আর যদি তা না থাকে তবে এটাকে অবশ্যই ধ্বংস করতে হবে।” এবং এই গ্রন্থাগারকে ধ্বংস করা হল।
 
একজন পর্যটক হিসাবে যদি আপনি আরব এবং মুসলিম দেশগুলিতে ভ্রমণ করেন তবে আপনি কোন পুরাকীর্তিগুলি দেখবেন? অবশ্যই মুসলিম পুরাকীর্তিগুলি নয়। মিসরে আপনি দেখবেন ফারাওদের প্রত্ন নিদর্শনগুলি, ইরাকে ব্যাবিলনীয় প্রত্ন নিদর্শনগুলি; সিরিয়া, তিউনিসিয়া, মরক্কো এবং তুরস্কে আপনি দেখবেন গ্রীক এবং রোমান প্রত্ন নিদর্শনগুলি, লেবাননে ফিনিশীয় প্রত্ন নিদর্শন ইত্যাদি।
 
দুইটি সুন্দর গীর্জাকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে। একটা হচ্ছে ইস্তানবুলের সোফিয়া, অপরটি দামেস্কে অবস্খিত যেটাকে এখন উমাইয়াহ্ মসজিদ বলে।

 ইসলামের জন্মের পর থেকে মুসলিমরা পৃথিবীকে দুইটি ভাগে বিভক্ত করেছে – একটি হচ্ছে দারুল ইসলাম, যেখানে ইসলাম হচ্ছে রাষ্ট্রের ধর্ম, অপরটি হচ্ছে দারুল র্হব, যা হচ্ছে অবিশ্বাসীদের দ্বারা শাসিত এবং যেখানে মুসিলমরা সংখ্যালঘু হিসাবে থাকতে পারে।

 কায়রো/মিসরে আমেরিকান ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণার ফল অনুযায়ী দেখা গেছে যে, পৃথিবীর সংখ্যাগুরু মুসলিমরা “আল্লাহ্ আইন” শরীয়াকে বিশ্বব্যাপী বলবৎ দেখতে চায়।
 
মতাদর্শিকভাবে অর্থাৎ ধর্মীয়ভাবে মুসলিমরা সর্বদা আর সকল ধর্মের উপর ইসলামের “বিশুদ্ধতা” এবং “শ্রেষ্ঠত্ব” দাবী করেছে। ইহুদী এবং খ্রীষ্ট ধর্ম সম্পর্কে মুসলিমদের দাবী হচ্ছে যে এই দুইটি ধর্ম কালক্রমে দূষিত হয়েছে। শাস্ত্রীয় ইসলাম বহুদেবতাবাদী ধর্মীয় বিশ্বাসগুলিকে নির্মূল করতে চায়। আজ অবধি পৃথিবীব্যাপী মাদ্রাসা এবং মসজিদগুলি এই কথাই প্রচার করছে।

 উপরন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ  মুসলিমদের পক্ষে ইসলামকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক করা অচিন্তনীয়। তারা দাবী করে ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্খা, যেখানে মানুষের জীবন এবং সমাজের ধর্মীয় এবং জাগতিক সকল কিছুই ইসলাম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। তারা আরও বিশ্বাস করে “শরীয়া” সর্বকালের সর্বস্থানের সর্বশ্রেষ্ঠ আইন।
 
গ্রীক দর্শন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে “যুক্তিবাদ” এবং “জাগতিকতার” প্রবক্তা ইবনে খালদুন (১৩৩৬-১৪০৬) এবং ইবনে রুশদ (১১২৬-১১৯৮) মুসলিম সাম্রাজ্যের তথাকথিত “স্বর্ণযুগে” বিচারের সম্মুখীন হয়ে গৃহবন্দী হয়েছিলেন। এই দুই পণ্ডিতের কেউই কিন্তু মুসলিম সাম্রাজ্যের কেন্দ্র যথা বাগদাদ এবং কায়রোতে গ্রীক দর্শন অধ্যয়ন এবং তাদের পাণ্ডিত্যপূর্ণ গ্রন্থগুলি লিখতে সমর্থ হন নাই। বরং তারা সে কাজে সমর্থ হয়েছিলেন ইসলামী সাম্রাজ্যের প্রান্তস্থ স্পেনে যা তখন অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি অর্জন করেছিল।

 বর্তমানে মুসলিম পণ্ডিতরা কোরআন ও হাদীসের অযৌক্তিক প্রচীন বক্তব্যগুলির সমালোচনা করতে সাহস করেন না। একাজ করলে নিহত হবার বা বিচারের সম্মুখীন হবার ঝুঁকি থাকে । মিসরীয় ধর্মশাস্ত্রবিদ নাসের হামেদ আবু জায়ীদের নাম এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য।
 
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান ব্যক্তিবর্গ ব্যাপকভাবেই অতীতে এবং বর্তমানে মৌলবাদী এবং তারা পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতার অধিকারী। তারা আরব­মুসলিম নেতাদের দৃঢ় মিত্র হয়ে আছে।

 “ওয়াজারাত আল আওকাফ” নামক ধর্মীয় মন্ত্রণালয়ের পরিচালনাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহ অথবা কায়রো/মিসরের আল আজহারের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ সর্বাত্মকবাদী সরকারসমূহের শাসন স্থায়ী করার ক্ষেত্রে সব সময়ই “অতীব” গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শাসকের কার্যাবলীকে যখন এবং যেখানে তারা উভয় পক্ষের জন্য সুবিধাজনক মনে করেছে তখন সেখানে তারা শাসকের কার্যাবলীকে ইজতিহাদ (ব্যাখ্যার প্রচেষ্টা) এবং ফতোয়া দ্বারা বৈধতা দান করার চেষ্টা করেছে। তারা সর্বদাই জনগণের মগজ ধোলাইয়ের ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং এইভাবে তাদেরকে শাসকদের ইচ্ছার অধীনস্থ করতে সাহায্য করেছে।
 
আত্মসমর্পণ ইসলামের কেন্দ্রবিন্দু, বস্তুত ইসলামের আক্ষরিক অর্থও তাই। মুসলিম বিশ্বের জনগণ বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ অশিক্ষিত জনগণকে শাসকের পদানত করে রাখতে এই আত্মসমর্পণবাদী ইসলাম কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। অধিকন্তু কোরআন এবং হাদীস অনুসারে মুসলিমরা অবশ্যই “ওয়ালী আল আম্” (শাসক) এবং পরিবারের প্রবীণতর “পুরুষ”-এর ইচ্ছাধীন হবে।

 মুসলিমদেরকে এই মতবাদ দ্বারা শান্ত করা হয় যে, “সবই আল্লার ইচ্ছা। পুরস্কার আসবে আখিরাতে।” ইসলাম ওয়ালী আল আম্র (শাসক)-এর ইচ্ছার নিকট আত্মসমর্পণ করার তাগিদ দেয়। শাসকের ইচ্ছার বিরোধিতা করা ইসলামে হারাম (পাপপূর্ণ)। ফল স্বরূপ মুসলিমরা শিক্ষা লাভ করে কপটতা এবং পরার্থবাদী নেতৃত্বকে ভয় এবং অপছন্দ করে। গোলামীর মানসিকতাপূর্ণ জনগণ পরার্থবাদী নেতৃত্বকে জন্ম দিতে কিংবা ধারণ করতে অক্ষম হয়।
 
অধিকন্তু কোরআন-হাদীসসহ ইসলাম রাজনৈতিক দল গঠন এবং “গণতন্ত্রের” ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে। তাদের বিশ্বাস এইগুলি ধর্মহীনদের খাম খেয়াল যা মুসলিম উম্মাহ (জাতি)-কে বিভক্ত করে। তার পরিবর্তে ইসলাম সমাজের ক্ষমতাশালীদের মধ্যে “শূরা” (পরামর্শ)-এর পক্ষপাতী।
 
এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে “আখি” (ভাই) হিসাবে সম্বোধন করে কিন্তু বাস্তবে তার নিজের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য যা খুশী তাই করে; কেননা এই ধর্ম কোন মুসলিমকে অন্য কোন মানুষের প্রতি ভালোবাসার শিক্ষা দেয় না। এবং সকলের অভিন্ন স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে এই কারণে কোন মুসলিম বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না। সমাজের অভিন্ন স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কিছু করা মুসলিম সমাজগুলিতে বাস্তবে প্রায় অজানা; জনগণকে পদানত করার জন্য ক্ষমতাবানরা সম্ভাব্য সব কিছুই করে।
 
মুসলিম নেতারা কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না এবং কেউ কারো সমালোচনা সহ্য করে না। তাদের প্রত্যেকেই বিশ্বাস করে তারা যা করছে তা সঠিক এবং তাদের মধ্যে যারা ভিন্নমত পোষণ করে তাদেরকে “বিশ্বাসঘাতক” হিসাবে চিহ্নিত করে।
 
অধিকন্তু, সংস্কার, যথাযথ উন্নয়ন এবং বিভিন্ন সমস্যার উপযুক্ত সমাধান দিতে ব্যর্থ হবার কারণে আরব রাষ্ট্রগুলো জনগণের দৃষ্টিকে  মূল জায়গা থেকে সরিয়ে অন্যদিকে নিবার জন্য অভ্যন্তীরণ ও বাহ্যিক বিরোধকে উস্কে দেয়। ইসরাইল-প্যালেস্টাইন সংঘাত এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য।
 
এইভাবে আরব এবং মুসলিম রাষ্ট্রগুলো অভ্যন্তরীণ বিভাজন, সংঘাত এবং দুর্বলতার শিকার হয়ে আছে।
 
মুসলিম সাম্রাজ্য এবং পরবর্তীকালে বিংশ শতাব্দী ব্যাপী অধিকাংশ স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্রগুলি অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী সরকার দ্বারা শাসিত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত হচ্ছে। তারা হচ্ছে একদিকে সৌদী আরব, জর্ডান, আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, ওমান এবং মরক্কোর মত নিরঙ্কুশ রাজতান্ত্রিক অথবা মিসর, আলজিরিয়া, তিউনিসিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, সুদান এবং সাদ্দামের অধীন ইরাকের মত আধাসামরিক সরকার দ্বারা শাসিত দেশসমূহ। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, তুরস্ক এবং ইন্দোনেশিয়া মাঝেমধ্যে সামরিক শাসনাধীন থেকেছে। আরব এবং মুসলিম সমাজগুলি ভ্রান্ত, বাস্তব বিবর্জিত এবং মোহগ্রস্ত মানসিকতা দ্বারা আচ্ছন্ন হয়ে আছে। আরব এবং মুসলিম প্রচার মাধ্যমগুলির সর্বক্ষণের কাজ হচ্ছে মগজ ধোলাই করা আর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করা, যার মূল কথা হল ইসলাম সর্বকালের সর্বসেরা ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক ব্যবস্খা, আর ইসলামী পৃথিবীর সকল দুর্দশার জন্য পাশ্চাত্য আধিপত্যই একমাত্র দায়ী।
 
মিসরের গ্র্যান্ড মুফ্তি আলী গোমা ইসলামকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে দাবী করে বলেছেন, “যারা ইসলামকে পছন্দ করে না তারা ইসলামকে বুঝতে পারে না বলেই তাকে পছন্দ করে না।” ইরানী-জার্মান নাভিদ কারমানির মত ইসলামী কৈফিয়ৎদাতারা দাবী করেন, “খুব কম সংখ্যক মানুষ শরীয়া বোঝে।” অন্যকথায়, কোরান-হাদীসের যে সব বক্তব্য থেকে ঘৃণা, সহিংসতা এবং নারীর প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে সেগুলি সবই ভুল বুঝাবুঝি মাত্র।
 
একদিক থেকে মুসলিমরা সুদকে প্রত্যাখ্যান করে, অন্যদিকে ব্যাংক থেকে সুদ গ্রহণ ও প্রদান করে লভ্যাংশের নামে। তারা দম্ভের সঙ্গে এ কথাও ঘোষণা করে যে, ইসলাম নারীকে “মুক্তি” দিয়েছে। কিন্তু তত্ত্ব এবং বাস্তব উভয় দিক থেকেই ইসলামে নারী বৈষম্য ও অমাননার শিকার। (দেখুন,Is Islam a violent Faith? And Women in Hadith)|

 মুসলিম ধর্ম যাজকরা আরও দম্ভোক্তি করে যে, কোরআন হচ্ছে “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ।”
 
জগলুল আল নাজ্জা নামে এক ভূ-তত্ত্ববিদ এবং মৃত্তিকা বিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং মুসলিম ধর্মশাস্ত্রবিদ মিসরীয় আল আহরাম পত্রিকায় প্রতি সপ্তাহে প্রবন্ধ লেখেন। সেই প্রবন্ধগুলিতে তিনি দাবী করেন কোরআন সর্বকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ। উদাহরণস্বরূপ, যেহেতু কোরআনে “র্থরা” (পরমাণু) শব্দের উল্লেখ আছে সেহেতু তিনি দাবী করেন মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ সকল “বৈজ্ঞানিক গ্রন্থের” “মাতৃ” স্বরূপ। যখন সাধারণ মুসলমানরা এসব কথা শুনে তখন তারা প্রচণ্ডরূপে আহ্লাদিত হয়। মুসলিম প্রচারবাদীরা তথাকথিত “ইসলামের স্বর্ণযুগের” অলীক চিত্র অঙ্কন করেন। যদিও তৎকালীন পৃথিবীর প্রথম সারির সভ্যতাগুলিকে দখল ক’রে এবং তথাকার সকল বুদ্ধিবৃত্তিক এবং বস্তুগত সম্পদ দখল ক’রে বৃহৎ ইসলামী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তথাপি তা একটি আদর্শ ও কল্যাণমূলক সমাজের ধারেকাছেও ছিল না। তৎকালীন ইসলামী সাম্রাজ্য যতটুকু কল্যাণমূলক হয়েছিল তা হয়েছিল আল মামুন এবং তার উত্তরাধিকারী ব্যতিক্রমী এবং ধর্মপথত্যাগী খলীফাদের ভূমিকার ফলে।

 নি:সন্দেহে যে কোন ধর্মই তার অনুসারীদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে পড়ে। ম্যাক্স ওয়েবারের মতানুযায়ী প্রটেস্ট্যান্টবাদ শিল্প বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করেছিল। কিন্তু মুসলিমরা যেখানেই বাস করেছে সেখানেই তাদের সকল প্রকার সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ইসলামের কারণে ব্যাহত হয়েছে। অতীতে মুসলমানরা যেটুকু অবদান রাখতে পেরেছিল সেটুকু সম্ভব হয়েছিল কেবলমাত্র ইসলাম থেকে বিচ্যুত হবার কারণে। জার্মান মাসিক পত্রিকা Mercure-এ “সংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক সাফল্য” নামক প্রবন্ধে সিগফিন্সড কোলহ্যামার সংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক প্রগতির মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন।

 কোলহ্যামার “সংস্কৃতিকে” দেখছেন মূল্যবোধ, ধর্মীয় রীতিনীতি-বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যিক অভ্যাসের যোগফল হিসাবে, যা কিনা অচেতন অথবা অবচেতনে একটা জনগোষ্ঠীর চিন্তা এবং আচরণকে নির্ধারণ করে। সংস্কৃতি যেটাকে আমরা আমাদের সামাজিকীকরণের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অর্জন করি সেটা আমাদের চারপাশের বুদ্ধিবৃত্তিক, মানবিক এবং বস্তুগত পরিবেশকে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।
 
মুসলিমদের জন্য এ কথা সবচেয়ে বেশী প্রযোজ্য। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠই হোক অথবা উন্নত দেশে সংখ্যালঘিষ্ঠ হিসাবে বসবাস করুক তাতে কিছু যায় আসে না।

 মুসলিমরা সংখ্যাগুরু হিসাবে অর্থনৈতিকভাবে কম সফল এবং যেখানে তারা অভিবাসী সেখানে তারা সেখানকার সমাজের সঙ্গে কম একাত্ম হয়। তিনি বিশ্বাস করেন যে, কতকগুলো বিশেষ ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক রীতিনীতি ও বিশ্বাস মুসলিমদের অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করে।
 
কোল হ্যামার বলেন যে, মুসলমানরা সাধারণভাবে তাদের পরিবার এবং বিশেষত তারা তাদের পরিবারের নারী সদস্যদের সম্পর্কে চরমভাবে সংরক্ষণবাদী এবং পিতৃতন্ত্রী। অন্যান্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর মত তারা তাদের মেয়েদেরকে ঘরের বাইরে কাজ করতে দেয় না এবং তারা চায় না তাদের নারীরা আত্মপ্রতিষ্ঠা লাভের জন্য সচেষ্ট হোক। অভিবাসী মুসলিম সম্প্রদায় এবং অমুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যকার সম্পর্ক হচ্ছে অবিশ্বাস ও সন্দেহের। সাধারণভাবে বলতে গেলে মুসলিমরা তাদের বস্তুগত ব্যর্থতার জন্য অতীত ইউরোপীয় উপনিবেশবাদকে এবং তাদের বর্তমান দারিদ্র্যের জন্য পাশ্চাত্য আধিপত্যকে দায়ী করে। আবার একই সঙ্গে তারা খুব সহজেই সবকিছুকে আল্লাহ্র ইচ্ছার উপর ছেড়ে দেয়। তারা বিশ্বাস করে যে, জাগতিক জীবন তুচ্ছ, তাই জাগতিক কর্মকাণ্ড মূল্যহীন। এবং তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, পরকালে একমাত্র তারাই ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভ করবে। আরব মুসলিম সংস্কৃতিতে “উচ্চাকাáক্ষা” ও “লোভের” মধ্যে কোন পার্থক্য নাই। এই মনোভাব এবং সংকীর্ণ অর্থনৈতিক প্রেরণা আরব এবং বৃহত্তর মুসলিম বিশ্বের কাজের নৈতিকতা এবং অর্থনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হয়েছে। এইরকম পীড়নমূলক অর্থনৈতিক পরিবেশের মধ্যে টিকে থাকতে গিয়ে আরব এবং মুসলমানরা রাষ্ট্র এবং সহ নাগরিকবৃন্দের প্রতি উদ্ভাবন করেছে প্রতারণার সৃষ্টিশীল পদ্ধতি। প্রতরণামূলক দরকষাকষি ও ঘুষ দৈনন্দিন লেনদেনের এক অপরিহার্য অংশ। জিনিসপত্র কেনাকাটার সময় বিক্রেতা আল্লাহ্ নামে শপথ করে বলবে, ক্রেতা বিক্রেতাকে যে দামের প্রস্তাব করেছে, সেই দাম হচ্ছে তার ক্রয়মূল্য; যখন ক্রেতা অন্যদিকে যেতে শুরু করবে তখনই বিক্রেতা ক্রেতাকে ডাক দিবে এবং ক্রেতার প্রস্তাবিত দাম অনুযায়ী ক্রেতার নিকট উক্ত জিনিসটি তথাকথিত ক্রয়মূল্যেই বিক্রি করবে। আসলে উক্ত কথিত ক্রয়মূল্যটি বিক্রেতার প্রকৃত ক্রয় মূল্য নয়। এই রকম লেনদেন যদিও যৌক্তিক এবং সৎ নয় তথাপি এটাই আরব এবং মুসলিম পৃথিবীর ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান রীতি। এই রীতিকে বলা হয় “শাতারা” (স্মার্টনেস)। ইউরোপে আরব এবং মুসলিম অভিবাসীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ প্রতারণামূলক এবং অসৎ পন্থায় সেখানকার কল্যাণমূলক ব্যবস্খার সুযোগ গ্রহণ করে। এই প্রকার আচরণও তাদের কাছে এক রকম “শাতারা”।
 
আরব দুনিয়ার সরকারগুলি প্রকৃত পক্ষে একটি আধুনিক মুক্ত অর্থনৈতিক বাজারের মাধ্যমে সমগ্র জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আগ্রহী নয়। অল্পসংখ্যক সফল আরব ব্যবসায়ী সরকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে অবস্খান করে। সাধারণত এই লোকগুলি হচ্ছে শাসনব্যবস্খার অংশীদার।
 
রাজনৈতিক নিপীড়নের হাতিয়ার হিসাবে অর্থনৈতিক উৎপীড়ন চালানো হয়। ভোক্তার মৌলিক প্রয়োজন যেমন রুটি, চিনি, চা ইত্যাদির জন্য রাষ্ট্র থেকে ভর্তুকী দেওয়া হয়, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের আনুগত্য লাভ করা এবং জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করা। একটি আধুনিক, মুক্ত এবং অনিয়ন্ত্রিত বাজার হয়ত সৃষ্টি করতে পারত বৃহত্তর সমাজের কল্যাণ এবং সমৃদ্ধি। এটাই আবার জনগণের ক্ষমতায়ন এবং স্বাধীনতা বৃদ্ধি করত। এবং সেটা তাদেরকে গণতন্ত্র, বাক্ স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার দাবী করতে উৎসাহিত করত।

 বেশীরভাগ আরব ও মুসলিম দেশগুলিতে নিশ্চিত ও লোভনীয় প্রায় সব চাকুরী সরকারী বিভাগ এবং রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে বিদ্যমান। উচ্চবর্গ এবং ক্ষুদ্র মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকজন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রের বিভিন্ন চাকুরীতে নিয়োজিত হয়। বেশীর ভাগ চাকুরী এবং এই সব চাকুরীতে যারা নিয়োজিত তারা রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বেসরকারী খাতসমূহে ভাল চাকুরী খুব কমই পাওয়া যায়। বছরে ২-৩ শতাংশ হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সরকারী এবং বেসরকারী উভয় খাতেই পর্যাপ্ত কর্মসংস্খানের ব্যবস্খা করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্রই দেউলিয়া এবং বেসরকারী খাত বলতে গেলে প্রায় পুরোটাই অচল। সীমাবদ্ধ আয় এবং মূল্যবৃদ্ধির দ্রুত গতির সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির সাহায্য নেওয়া হয়।

সম্ভাব্য ঘুষ গ্রহীতারা হচ্ছে সরকারী কর্মকর্তা, পুলিশ, বিচারক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দও। অবশিষ্ট জনগণ নিমজ্জিত থাকে চরম বঞ্চনার ভিতর। এই দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবেশ মানুষের জীবনী শক্তি, উদ্যোগ এবং সৃজনশীলতাকে গলা টিপে মারছে। এটা এমন একটা সংস্কৃতি তৈরী করে যেখানে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের বিকাশ ঘটে এবং এই ধরনের গুজবগুলো জনপ্রিয় হয়, যেমন “আমাদের দুর্গতির জন্য অন্যরা দায়ী, প্রধানত পাশ্চাত্য।” ইসলামবাদী জাতীয়তাবাদীরা বারবার এ কথা বলে বিরক্তি প্রকাশ করে যে, “আমরাই হচ্ছি পৃথিবীর মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ উম্মা (জাতি), কিন্তু পাশ্চাত্য আমাদের উন্নয়নকে ঠেকিয়ে রেখেছে।”
 
বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। আরব এবং মুসলমান রাষ্ট্রনেতা এবং যুদ্ধবাজ নেতারা তাদের নিজ নিজ জনগোষ্ঠীকে নৃশংস দ্বন্দ্ব-সংঘাতে ব্যস্ত রাখে। ইরাক, প্যালেস্টাইন, লেবানন, লিবিয়া, আফগানিস্তান এবং খুব সম্প্রতি সোমালিয়ায় এই একই প্রকৃতির নেতা এবং যুদ্ধবাজ নেতারা এই রকম কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে।
 
আরব সরকারগুলির রাজনৈতিক আলোচনার ধরন হলো অবজ্ঞাপূর্ণ বিরোধিতা এবং মারমুখী আচরণ। দৃষ্টান্ত স্বরূপ বলা যায়, ইরাকের সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর লিবিয়ার একনায়ক আল গাদ্দাফী লিবিয়ার প্রত্যেক নগরে সাদ্দামের মূর্তি স্খাপনের ঘোষণা দেন।

 অধিকাংশ আরবরাই হচ্ছে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞ। তাদের অবসর সময় অতিবাহিত হয় এই সব বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক করে। স্খানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমালোচনা অথবা বিক্ষোভ দমন করা হয়। প্রচার মাধ্যমেও এই সব বলা হয় না। এবং এই ধরনের সমালোচনা এবং বিক্ষোভের পরিণতি হচ্ছে কারাবাস এবং নির্যাতন। অন্যদিকে গুয়ানতানামোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসমূহের অতি ক্ষুদ্র বিক্ষোভ প্রদর্শনকেও প্রত্যেক আরব রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টিভি এবং সংবাদপত্র ফলাও করে প্রচার করে।

 উন্নত অথবা অনুন্নত দেশগুলির কোথায়ও সংখ্যালঘু হিসাবে মুসলিমরা অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মত সফল হতে পারে নাই। উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকা, আফিন্সকা এবং এশিয়ায় ইহুদী, জার্মান, জাপানী, কোরীয়, চীনা, ভারতীয়, শিখ এবং আর্মেনীয়রা সর্বাপেক্ষা সফল জনগোষ্ঠী, কিন্তু মুসলমানরা কোথায়ও তা না।

 মুসলমানদের চরম শত্রু ইহুদীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার মাত্র ১%, অথচ অন্য আমেরিকানদের তুলনায় জীবনযাত্রা এবং শিক্ষাগত মানের ক্ষেত্রে তাদের অবস্খান ৮০% ঊর্ধ্বে। নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যে ১৬% হচ্ছে ইহুদী। উদাহরণ স্বরূপ ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ায় (দুইটিই মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশ), থাইল্যাণ্ড এবং আমেরিকায় চীনা সম্প্রদায় হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে সবচাইতে সফল জনগোষ্ঠী। একই কথা প্রযোজ্য জাপানী, ভারতীয় এবং কোরীয় সংখ্যালঘুদের সম্পর্কেও। উগান্ডা এবং কেনিয়ায় ভারতীয় সংখ্যালঘুদের অবদান মোট জাতীয় উৎপাদনের ৩৫%। আমেরিকা এবং ইউরোপে আরব মুসলিম এবং মুসলিমরা সাধারণত এত সফল নয়। গ্রেট ব্রিটেনে বাংলাদেশী এবং পাকিস্তানী (সবাই মুসলমান) অভিবাসীদের ৬১%ই হচ্ছে কর্মসংস্থানহীন। পাকিস্তানীদের ৪৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশীদের ৬০ শতাংশের শিক্ষার মান হচ্ছে নিম্ন পর্যায়ের। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে  সাধারণ ব্রিটনদের তুলনায় ভারতীয়দের আয় বেশী।
 
সুইডেনে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ভিতর কর্মসংস্খানের হার যেখানে ৭৪ শতাংশ সেখানে এই কর্মসংস্থানের হার তুর্কীদের মধ্যে মাত্র ৪২ শতাংশ, লেবননীদের মধ্যে ৩১ শতাংশ, ইরাকীদের মধ্যে ২১ শতাংশ এবং সোমালীদের মধ্যে ১২ শতাংশ।

 অন্যদিকে বৈরুত/লেবাননে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি গবেষকদের একটি দল সম্প্রতি একটি জরিপের মাধ্যমে দেখেছে যে, মুসলিম এবং অমুসলিম সমাজগুলিতে সংখ্যালঘু হিসাবে আরব খৃষ্টানরা তাদের প্রতিপক্ষ মুসলিমদের তুলনায় অর্থনৈতিকভাবে অধিকতর সফল।
 
ইসলাম নামক একটি মধ্যযুগীয় উৎপীড়নমূলক ধর্ম নিয়ন্ত্রিত মুসলিম সংস্কৃতি কখনই আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় নাই। এটা যত দিন পর্যন্ত না হবে ততদিন পর্যন্ত ইসলাম মুসলিম সমাজসমূহের আগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করবে।

 এইজন্য আরব এবং মুসলিম পৃথিবীতে মানবতার  সামগ্রিক কল্যাণের জন্য রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সংস্কার অত্যাবশ্যক। এই সংস্কার সাধনের জন্য আরব/ মুসলিম সরকারগুলির উপর আলোকিত বিশ্বকে অবশ্যই তার চাপ বৃদ্ধি করতে হবে। কেবলমাত্র তা হলেই বঞ্চনা এবং উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকে জয়যুক্ত করা যাবে।
 
রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সংস্কার হচ্ছে মুসলিম পৃথিবীতে উন্নয়ন এবং শান্তির চাবিকাঠি। সেটা কি হবে? আমি সাধারণত আশাবাদী। কিন্তু এখন আর আমি আশাবাদী হতে পারছি না।

 (নিবন্ধটিDr. Sami Alrabaa কর্তৃক লিখিত Islam: A Legacy of Oppression, Violence and Fanaticism-এর ভাষান্তর। মূল ইংরাজী নিবন্ধটি ইসলাম ওয়াচ (www.islam-watch.org)-এ ১ জুন, ২০০৯ তারিখে প্রকাশিত হয়। – বঙ্গরাষ্ট্র)

 
অনলাইন : ২৬ আগস্ট, ২০০৯
 
 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Archive
 
সাম্প্রতিক পোষ্টসমূহ