বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ’৭১-এর বাঙ্গালীর জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং লোকবাদ বা সেকিউলারিজমের প্রথম দাবীই হচ্ছে ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে বাঙ্গালী জাতির যে বিভাজন ঘটেছিল তাকে নাকচ করা। এই দাবীর একমাত্র যৌক্তিক পরিণতি হচ্ছে পারস্পরিক স্বেচ্ছাসম্মতির ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম লোকবাদী রাষ্ট্রে বাংলা ও বাঙ্গালী জাতির পুনরেকত্রীকরণ সম্পন্ন করা। এই দাবী কখন বাস্তবায়িত হবে সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে এটা যুক্তি ও নৈতিকতার দাবী, বাঙ্গালীর স্বাধীনতা যুদ্ধের দার্শনিক ভিত্তির দাবী। এই দাবীকে অস্বীকার করলে যৌক্তিক ও নৈতিক ভাবে দুইটি বিকল্প বাংলাদেশের সামনে থাকে। একটি হচ্ছে ধর্মীয় রাজনীতির পুনঃপ্রতিষ্ঠা দ্বারা পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের আত্মবিলুপ্তি ঘটানো। অপরটি হচ্ছে বাঙ্গালীর জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বর্জিত লোকবাদ বা ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ভারত রাষ্ট্রে আত্মবিলুপ্তি ঘটানো। এতকাল চলছিল পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনের পথে যাত্রা। এখন সেটা কিছুটা থমকালেও থেমে নাই। অপর দিকে ক্রমে জোরদার হচ্ছে ভারত রাষ্ট্রে যোগদানের বিকল্প।
সুতরাং বাংলাদেশের সামনে তিন বিকল্প। এখন বাংলাদেশকে চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ
করতে হবে তা কোন বিকল্পকে গ্রহণ করবে। মাঝখানে ঝুলে থাকার দিন বাংলাদেশের
জন্য ফুরিয়েছে। এই রকম এক বাস্তবতায় রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ এবং জাতি
হিসাবে বাঙ্গালী গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত। এই সঙ্কট থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত
করার জন্য ‘বঙ্গরাষ্ট্র’ অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বঙ্গরাষ্ট্র, ঢাকা, বাংলাদেশ, ২ মার্চ, ২০০৮