Banner
সৌদি আরবের পরিবর্তন আর বাংলাদেশের মোল্লা সম্প্রদায় — সুষুপ্ত পাঠক

লিখেছেনঃ সুষুপ্ত পাঠক, আপডেটঃ August 5, 2019, 12:00 AM, Hits: 1025

 

সৌদি আরবের একের পর এক ইসলাম বিরোধী আইন পাসের বিরুদ্ধে এদেশের তৌহিদী জনতাকে যারা লিড দেয় সেই টুপি-দাড়িঅলাদের কোন ক্ষোভ নেই। কারণ হজের দালালী করা বন্ধ করে দিবে সৌদি সরকার। মাদ্রাসা, মসজিদের মোল্লা আর পীর সাবেহদের হজের জন্য হাজি ধরে এনে কমিশন খাওয়ার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। সৌদি দূতাবাসের ঘোরাও ঘোষণা দিলে চরমোনাই পীরের দালালী করে খেতে হবে না। আহমদ শফির ভিক্ষার টাকা আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সৌদি আরব মুহাম্মদের নাম নিশানা মুছে ফেললেও তৌহদী জনতার লোম খাড়া হবে না।

সৌদি আরবের নারীদের এখন থেকে দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করতে তাদের পুরুষ অভিভাবককে সঙ্গে নিতে হবে না বা অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। এক সপ্তাহের মধ্যে পৃথিবীর দুই প্রান্তে ইসলামের হুকুমতের উপর আঘাত আসল। প্রথমটি ভারতের পার্লামেন্টে কুরআনের অধিকার তিন তালাক ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে এখন থেকে গণ্য হবে। মৌখিকভাবে তিন তালাক দিয়ে স্ত্রী বিচ্ছেদের চেষ্টা করলেই তিন বছরের জেল। দ্বিতীয় ঘটনাটি ইসলামের জন্মভূমি সৌদি আরবে। ইসলাম নারীদের পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে মনে করে না। তারা পুরুষদের অধীনে থাকবে এবং তাদের জীবনে ব্যক্তি সিদ্ধান্ত বলতে কোন কিছুর অস্তিত্ব থাকবে না। কারণ কুরআন-হাদিস নারী অধিকার স্বীকার করে না। যে কারণে সৌদি আরব ইসলামের আঁতুর ঘর হিসেবে এখানে কোনদিন নারীরা স্বাধীন সত্তা নিয়ে বাঁচতে পারেনি। যদি ইসলাম সত্যিই নারীদের স্বাধীন মর্যাদা দিতো তাহলে সৌদি আরবের মত দেশে নারীদের প্রতি এরকম আইনের বিরুদ্ধে সেদেশের ইসলামী স্কলাররা বিদ্রোহ করতেন। উল্টো সৌদি আরবে নারীদের ড্রাইভিং, সিনেমা দেখা এবং সম্প্রতি একা ভ্রমণের অধিকার জারি হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে ধর্মবেত্তারা।

ভারতে তিন তালাক আইন পাশের পর পরই দূতাবাস ঘেরাও করার কর্মসূচী ঘোষণা হয়েছে বাংলাদেশে। যদিও কারণ হিসেবে সেটি তারা দাবী করেনি। সেখান থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে ভারতে মুসলমানদের কিছু হলে বাংলাদেশের হিন্দুদের সমস্যা হয়ে যাবে। প্রিয়া সাহা যে মিথ্যা কিছু অভিযোগ করেননি চরমোনাই পীরের হুমকির পর সেটা দিনের আলোতে সবাইকে বেইজ্জতি করে ফেলেছে। শাহরিয়ার কবীর, খুশি কবীর, মুনতাসির মামুন স্যারদের প্রতিক্রিয়াটা জানতে ইচ্ছে করছিলো, বাংলাদেশের হিন্দুদের সমস্যা হবে - এরকম হুমকি দেয়াটাকে তারা কিভাবে বিবেচনা করেন? ভারতে হিন্দুত্ববাদ জেগে উঠায় যারা উদ্বিগ্ন তারাই বা এইসব ঘোষণাতে কেমন ফিল করেন?

এই সপ্তাহেই চীন ‘হালাল দোকান’ ও আরবীতে লেখা যে কোন প্রচারপত্র নিষিদ্ধ করেছে। চীন মসজিদ, কুরআন, আরবী নাম সব নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও চাইনিজ দূতাবাস ঘেরাও করার কোন কর্মসূচী জাতি দেখতে পায়নি। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানদের দ্বিতীয় আব্বা হচ্ছে চীন। ভারতের শত্রু আর পাকিস্তানের মিত্র চীন উপমহাদেশে ইসলামিক দেশ ও তাদের ইসলামিক জঙ্গিপনাকে সমর্থন করে যায় ভারত বিরোধিতার কারণে। আর্থিক ও রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ায় চীন হচ্ছে টুপিঅলাদের দ্বিতীয় আব্বা হুজুর। আব্বার নুন খেয়ে তার বিরুদ্ধে ঘেরাও করলে ভিক্ষে করে খেতে হবে। সব থেকে নিরাপদ হচ্ছে ভারতের বিরুদ্ধে কর্মসূচী দিলে। সরকার এসব কর্মসূচী আংশিক পালিত হতে দিবে যাতে পাবলিকের মনে না হয় দেশ ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে!

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর ইসলামিক গোষ্ঠীর বড় রকমের হামলার সন্দেহ উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। চরমোনাই পীরের ইসলামিক আন্দোলন সেরকম ইশারা দিয়েছে তাদের বক্তব্যে। সেরকম কিছু হলে আওয়ামী লীগ সরকার হিন্দুদের নিরাপত্তা দিবে না। ডোনাল্ড ট্রাম্পও এসে সরকারকে জবাবদিহি করতে আসবে না। বুদ্ধিজীবীরা যেহেতু একবার লুঙ্গি খুলে ফেলেছে প্রিয়া সাহা ইস্যুতে, তাই এবার তাদের আসল চেহারাই হিন্দুরা দেখতে পাবে। নিজের নিরাপত্তা নিজেরা করুন। দুর্গা পুজার দশমীতে এত হিন্দু কোত্থেকে আসে? কোথাও হামলা হলে এরাই মহিলাদের আঁচলের নিচে গিয়ে লুকায়? এমন কাপুরুষ যে মার খেয়ে ভারত পালানোর কথা ছাড়া অন্য কিছু এদের মাথাতে নেই। ক্রিমখোর আর সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা হিন্দুদের যদি বাকী হিন্দুরা তাদের নেতা মনে করে তাহলে তাদের পরিণতি ১৯৬৫ সালের দেশছাড়ার চেয়ে ভালো কিছু হবে না…।   

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Archive
 
সাম্প্রতিক পোষ্টসমূহ