লিখেছেনঃ আলমগীর হুসেন, আপডেটঃ September 11, 2011, 4:34 AM, Hits: 2942
আমাদের মহানবী মুহাম্মদ (সঃ) এসেছিলেন পৌত্তলিকতা নিধন করতে। কোরানের মৌলিক বিধান হলো : পৌত্তলিকতা তথা পৌত্তলিকদেরকে সমূলে ধংস করা (কোরান ৯.৫)। এবং মহানবীর আমলে তার দখলকৃত ভূখণ্ড থেকে পৌত্তলিকতাকে ও পৌত্তলিকদেরকে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছিল।
আমাদের মহানবী যখল সমরবলে শক্তিশালী হয়ে উঠেন, তখন আরবের যেসব সম্প্রদায় ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল তাদেরকে একের পর এক আক্রমণ করে পরাজিত করার পর, তাদের প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদেরকে হত্যা করতেন এবং নারী ও শিশুদের ক্রীতদাস বানাতেন, যার মাধ্যমে তারা মুসলিম বনে যেত। এবং কব্জাকৃত নারীদের মধ্যে যারা ছিলেন যুবতী ও সুন্দরী, তাদেরকে আমাদের মহানবী ও তাঁর জিহাদী সাহাবারা যৌন-সম্ভোগের সামগ্রী হিসেবেও ব্যবহার করতেন। যেমন, মদিনার বনী কুরাইজা, মুস্তালিকের বনী মুস্তালিক ও খাইবারের ইহুদীদেরকে আক্রমণে মহানবী ঠিক উপরোক্ত পন্থা প্রয়োগ করেছিলেন। প্রত্যেক ক্ষেত্রে মহানবী গোত্রগুলোর কব্জাকৃত নারীদের মধ্য থেকে সবচেয়ে সুন্দরী যুবতীকে -- কুরাইজার রেহানা, মুস্তালিকের জুবেরিয়া আর খাইবারের সাফিয়াকে -- নিজ যৌন-সম্ভোগের সামগ্রী হিসেবে কব্জা করতেন।
মুসলমানরা পরবর্তী কালে শত শত আক্রমণে বিশ্বের বিরাট ভূখণ্ড দখল করে এবং প্রত্যেক ক্ষেত্রেই মহানবীর এ আদর্শ পন্থা প্রয়োগ করেছে বা করার চেষ্টা করেছে। এবং কেবলমাত্র ভারতবর্ষ ছাড়া মুসলিম-দখলকৃত সকল দেশে পৌত্তলিকতা নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। ভারতবর্ষের পৌত্তলিকরা কিছুটা বেঁচে গেছে এখানে ইসলামের আগমন উমায়াদ আমলে ঘটার কারণে। কেননা উমায়াদ শাসনের প্রতিষ্ঠাতা যেহেতু ছিলেন আবু সুফিয়ানের ছেলে মুয়াবিয়া এবং আবু সুফিয়ানের সাথে মহানবীর হয়েছিল দীর্ঘস্থায়ী ও রক্তাক্ত দ্বন্দ্ব যাতে আবু সুফিয়ান লজ্জাজনকভাবে হেরে যান। এ কারণে বেশিরভাগ উমায়াদ খলিফারা ইসলামকে ঘৃণা না করলেও মহানবীকে ঘৃণা করতেন (কারবালার কাহিনী কে ভুলতে পারে) এবং ইসলামের প্রতি উদাসীন ছিলেন। মুহাম্মদ বিন কাসিম যখন উত্তর ভারতে এসে ইসলামের প্রকৃত পন্থা প্রয়োগ শুরু করে, তখন বেশিরভাগ হিন্দুরা ইসলাম গ্রহণ না করে মৃত্যুকে বরণ করে নিচ্ছিল। এতে উমায়াদ শাসকদের কোন লাভ হচ্ছিল না। কাসিম তখন বাগদাদের গভর্নর হাজ্জাজের সাথে পরামর্শ করে হিন্দু-বৌদ্ধ পৌত্তলিকদেরকে বাঁচিয়ে রেখে তাদের কাছ থেকে উচ্চহারে কর আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়, যেমনটি করা হয় জিম্মি প্রজা খৃষ্টান-ইহুদী একত্ববাদীদের ক্ষেত্রে। কোরানের আইন ও নবীর দৃষ্টান্ত ভংগ করে ভারতীয় পৌত্তলিকদের জন্য উমায়াদ শাসকদের এ “ছাড়” পরবর্তীতে ইসলামের “হানাফি” আইনে স্বীকৃতি পায়।
তথাপি তৎকালীন পৌত্তলিকতার বিশিষ্ট পুণ্যভূমি আমাদের ভারতবর্ষে মুসলিম আগ্রাসক ও দখলদাররা -- হোক সে মুহাম্মদ বিন কাসিম, সুলতান মাহমুদ, মুহাম্মদ গোরী, বখতিয়ার খিলজি ও পরবর্তী সুলতান-সম্রাটরা -- কোরানের নির্দেশ ও মহানবীর আদর্শ পন্থা প্রয়োগের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। ভারতবর্ষে ইসলাম আনয়ণকারী এসব মহান ইসলামী বীরদের সম্পর্কে পরবর্তীতে লিখার চেষ্টা করা হবে।
উপরোক্ত বাস্তবতার বিপরীতে, আমাদের স্বনামধন্য ঐতিহাসিকরা আমাদেরকে জানান : বর্ণবাদী হিন্দু-ব্রাহ্মণ্য অত্যাচারে অতিষ্ঠ ও পৌত্তলিকতার কুসংস্কারের অন্ধকারে আচ্ছন্ন ভারতবর্ষে সুলতান বিন কাসিম, সুলতান মাহমুদ ও মুহাম্মদ গোরী প্রমুখ ভারতীয় ইসলামের মহান বীরগণ শািন্ত সমতা ও প্রগতির ধর্ম, সত্য ধর্ম, ইসলাম আনয়নের মাধ্যমে অধঃপতিত ভারতবর্ষকে উদ্ধার করেন। মুসলিমদের মাঝে ঠিক এমনই ধারণা, এবং বেশীরভাগ হিন্দু-অমুসলিমরাও মূলত এর চেয়ে ভিন্ন কিছু জানে না।
তবে অতি সম্প্রতি কিছু সত্যনিষ্ঠ, অথচ অনেকটা অজ্ঞাত, ইতিহাস গবেষকরা ভারতে ইসলামী আগাসনের প্রকৃত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন কে, এস, লাল -- যিনি শুরুতে অন্যান্য মার্ক্সিস্ট-সোশ্যালিস্ট প্রাধান্যের ঐতিহাসিকদের মতো ইসলামের প্রশংসামূলক মনোভাব নিয়ে ভারতীয় ইসলামের ইতিহাস গবেষণা শুরু করেন। কিন্তু তার গবেষণালব্ধ প্রকৃত তথ্য এতটাই ভিন্ন যে, তিনি সত্যনিষ্ঠার খাতিরে সঠিক ঐতিহাসিক তথ্য-ভিত্তিক গবেষণাপত্র ও গ্রন্থ লেখা শুরু করেন। এর ফলে তিনি প্রাধান্যকারী ঐতিহাসিকদের রোষানলে পড়েন এবং কখনোই তার গবেষণা প্রকাশের জন্য ভাল প্রকাশক পান নি।
মূল কথা হলো : ইসলামের ইতিহাসের প্রকৃত তথ্য আজ পাওয়া যাবে কে, এস, লালের বই-পুস্তকে এবং ইন্টারনেটের কিছু অজ্ঞাত অয়েবসাইটে। সমস্যা হচ্ছে, কে, এস, লালের মত লেখক ও অয়েবসাইটগুলোকে আখ্যা দেওয়া হয়েছে হিন্দুত্ববাদী ও জাতি-বিদ্বেষী হিসেবে। বলা হয় ওসব বই বা অয়েবসাইটের তথ্য বিশ্বাসযোগ্য নয়; ওগুলো হল বানানো মিথ্যা তথ্য মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর উদ্দেশ্যে।
সম্প্রতি বন্ধু ব্লগার সন্যাসী আমাদের প্রাধান্যকারী ঐতিহাসিকদের দ্বারা আড়ালকৃত সম্রাট আকবরের শাসনামলে ঘটিত এরূপ এক তথ্যের উদ্ধৃতি দেন (দেখুন আরব-ইসলামী সাম্রাজ্যবাদ এবং ভাষা, শিল্প, সংস্কৃতি ও জাতিবৈচিত্র্যের বিলুপ্তি), যাতে সম্রাট আকবরের এক সেনা ৫ লাখ হিন্দু-অমুসলিমকে ক্রীতদাস হিসেবে ধরে মুসলমান বানায়। এমন তথ্য আমাদের কাছে প্রায় অবিশ্বাস্য। কাজেই পাঠক “বাদ দেন” বলেন :
"আকবরের সেনাদের হাতে ৫০,০০০ (আসলে ৫০০,০০০, বা ৫ লাখ) লোকের দাস বানানোর রেফারেন্সের লিঙ্ক কি হবে?"
ভারতের সকল মুসলিম আগ্রাসক ও শাসকরা ছিলেন মূলত বর্বর, অমুসলিমদের উপর নৃশংস অত্যাচার-নির্যাতনকারী, ক্রীতদাস-শিকারী ও অর্থনৈতিকভাবে নিষ্পেষক। তাদের মাঝে একমাত্র আকবর (রাজত্ব ১৫৫৬-১৬০৫) ছিলেন ভিন্ন, একমাত্র দিল্লী সুলতান বা সম্রাট, যিনি ছিলেন হিন্দু-অমুসলিমদের প্রতি সহনশীল। আকবরকে মুসলিম শাসক বলাও ঠিক না, কারণ তিনি ছিলেন ইসলামত্যাগী, ইসলাম-বর্জনকারী; এমনকি ইসলামকে ভারতবর্ষ থেকে নিশ্চিহ্ন করার প্রচেষ্টায় তিনি নিজ ধর্ম “দ্বীন-ই-ইলাহী” প্রবর্তনের জোর প্রচেষ্টা চালান তার শাসনের শেষ দিকে।
উল্লেখ্য যে, আকবরও শুরুতে অন্যান্য মুসলিম আগ্রাসক ও শাসকদের মত অমুসলিমদের উপর জোর-জবরদস্তিকারী হিসেবে তার শাসন শুরু করেন এবং সহনশীল ও উদার হয়ে উঠেন পরবর্তীতে। এ বিষয়ে তিনি “আকবরনামায়” লিখেন : “...I have forced many Brahmans, by fear of my power, to adopt the religion of my ancestors; but now that my mind has been enlightened with the beams of truth… (অর্থাৎ আমি আমার ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে অনেক ব্রাহ্মণকে আমার পূর্বপুরুষের ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করেছি, কিন্তু এখন আমার মন সত্যের আলোকে আলোকিত হয়েছে...)” (The History of India: As Told by Its Own Historians, Vol. 6, p. 60) এবং আকবরের সহনশীলতার পিছনে মূলত ছিল ভারতীয় সংস্কৃতি, নৈতিকতা ও সহনশীলতার প্রভাব এ বিষয়ে সময় হলে পরে আলোচনা করব।
যাহোক, আকবর হিন্দু-অমুসলিমদের প্রতি সহনশীল হয়ে উঠেন। যেভাবে আমাদেরকে ইতিহাস খাওয়ানো হয়, তাতে আকবরের আমলে ৫০০,০০০ অমুসলিমকে বন্দি করে ক্রীতদাস বানানোর কথা স্বভাবতই অবিশ্বাস্য মনে হওয়ার কথা। কাজেই এ তথ্য মিথ্যে; যে গ্রন্থ বা অয়েবসাইটে এ তথ্য পাওয়া যায়, সেগুলো বিশ্বাসযোগ্য নয়, বরং সম্ভবত জাতি-বিদ্বেষী, মুসলিম-বিদ্বেষী! সুতরাং পাঠক ‘বাদ দেন’ লিখেছে :
“আকবরের সেনাপতির উক্তি যেসব সাইটে পাইলাম সবই কন্ট্রোভার্সিয়াল সাইট।”
এবং কে, এস, লালের লেখায় এমন অজানা, আসলে আড়ালকৃত তথ্য উল্লেখিত হয়েছে বলে তিনি মুসলিম এবং মার্ক্সিস্ট ঘরানার অনেক প্রভাবশালী বুদ্ধিজীবী ও ঐতিহাসিকদের রোষের পাত্র হয়েছেন। যেমন প্রখ্যাত মুসলিম-মার্ক্সিস্ট ঐতিহাসিক ইরফান হাবিব লালের “The Growth of Muslim Population in Medieval India” গ্রন্থটির সমালোচনা করেছেন এ রচনায় : "Economic History of the Delhi Sultanate - An Essay in Interpretation" (Habib 1978)। উল্লেখ্য হাবিব তার প্রবন্ধটিতে কেবলই লালের বিরোধিতা করেছেন; লালের উল্লেখিত অজ্ঞাত ঐতিহাসিক তথ্যের খণ্ডন করেন নি এবং সে তথ্যের ভিত্তিতে লালের বক্তব্য যুক্তিযুক্ত কিনা সেটাও আলোচনা করেন নি। যাহোক হাবিব-এর মত জাঁদরেল ঐতিহাসিকরা লালের সমালোচনা করেছেন, কাজেই লাল বিশ্বাসযোগ্য নন। তার মানে দাঁড়ায় : তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করেন (হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার বশবর্তী হয়ে?)। লালের প্রসংগে “বাদ দেন” বলেন :
“লালের এগেইনস্টে ইরফান হবিব যা বলসে তা যদি মডারেট মুসলমানের উক্তি হিসেবে উড়াইলে ত প্রব্লেম।”
অর্থাৎ ইরফান হাবিব-এর মত নামজাদা ঐতিহাসিক যখন লালের সমালোচনা করেছেন, সেটাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না; লাল বিশ্বাসযোগ্য না। লালের উদ্ধৃত তথ্য মিথ্যে!
উল্লেখ্য আকবরের এক সেনার (সব সেনাদের না) ৫০০,০০০ হিন্দু-অমুসলিমদেরকে ক্রীতদাস হিসেবে ধরে মুসলমান করার তথ্য লালের “Muslim Slave System in Medieval India” গ্রেন্থ উল্লেখিত হয়েছে, এবং অধুনা বিভিন্ন পুস্তক ও অয়েবসাইটে সেখান থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া হয়।
লাল তথা ওসব অয়েবসাইট যেহেতু বিশ্বাসযোগ্য নয়, বরং সম্ভবত হিন্দুত্ববাদী মুসলিম বিদ্বেষের ফসল, কাজেই বিশ্বাসযোগ্য মূল সূত্রে (রেফারেন্স-এ) আসার আগে বলা প্রয়োজন : আকবর (রাজত্ব ১৫৫৬-১৬০৫) বন্দিদের গণহত্যা ও তাদের স্ত্রী-সন্তানদেরকে ক্রীতদাস বানিয়ে মুসলিম বানানোর চিরাচরিত পন্থা নিষিদ্ধ করেছিলেন (১৫৬৪ সালে)। অথচ ১৫৬৮ সালে চিতোর আক্রমণে নিজ নিষেধাজ্ঞা বর্জন করে তিনি রাজপুতদের পক্ষে যুদ্ধকারী আত্মসমর্পণকৃত ৩০,০০০ হাজার চাষীর গণহত্যার এবং নিহত ৮,০০০ রাজপুত সেনাদের স্ত্রী-কন্যাদেরকে ক্রীতদাসী হিসেবে কব্জা করার নির্দেশ দেন, যারা সম্ভম বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে মারা যায়। চিতোর বিজয় আকবরের হাতে ভারতীয় অমুসলিমদের গণহত্যার সবচেয়ে লজ্জাজনক ও নির্মম দৃষ্টান্ত।
যদিও আকবর হিন্দুদের উপর গণহত্যা ও তাদেরকে দাস হিসেবে ধরে মুসলমান বানিয়ে বিক্রি ও ব্যবহার করা দমন করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তার সেনারা, প্রধানত প্রাদেশিক শাসকরা, যারা দিলি− থেকে, তথা আকবরের নজর থেকে, দূরে থাকতেন -- তারা শত শত বছরের এ লাভজনক প্রথা ত্যাগ করতে পারেন নি। বত এটা ছিল তাদের ধর্মীয় দায়িত্ব, মহানবীর কর্মকাণ্ড দ্বারা মহিমান্বিত -- তাদের বেহেেস্ত যাওয়ার চাবিকাঠি। আকবরের এক সেনা, আব্দুল্লাহ খান উজবেগকে তিনি মালওয়া'র (মধ্য প্রদেশে) শাসক নিয়োগ করেছিলেন এবং উজবেগ মাত্র ২-৩ বছর মালওয়া শাসন করেন। এবং এ উজবেগ তার স্বল্পস্থায়ী মালওয়া শাসনকালে কেবল ৫০০,০০০ কাফেরকে ক্রীতদাস হিসেবে ধরে মুসলমানই বানাননি, তাদের উপর বর্বর গণহত্যাও চালান। এ তথ্যের মূল সূত্র হল MAASIR-UL-UMARA (p. 105), by Shah Nawaz Khan (biographies of the Muhammadan and Hindu officers of the Timurid sovereigns of India from 1500 to about 1780):
S. Farîd Bhakari says in the Zakhîra-ul-khwânîn that, "At the time when Abdullah was kept under surveillance by Khân Jahân Lodî the latter sent through me 10,000 Rs. for his expenses. I said to 'Abdullah, 'The Nawâb has done much as a holy warrior in the path of God. How many infidels' heads have you caused to be cut off?' He said, 'There would be 200,000 heads so that there might be two rows of minarets of heads from Agra to Patna. I said, 'Certainly there would be an innocent Muhammadan among these men.' He got angry and said, 'I made prisoners of five lacs of women and men and sold them. They all became Muhammadans. From their progeny there will be krors by the judgment day. God's apostle used to go to the house of the cotton-carder (naddâf) and beg him to become a Masalman. I at once made five lacs of people Masalmâns. If justice were done, there would be even more followers of islâm."
উল্লেখ্য শেখ ফরিদ বুখারী ছিলেন সমকালীন ভারত বিখ্যাত সুফি সাধক শেখ আহমদ সিরহিন্দির সুপ্রিয় শিষ্য। সিরহিন্দি আকবরের উদার ও সহনশীল নীতির ঘোর বিরোধী ছিলেন এবং অমুসলিমদের উপর চিরাচরিত অত্যাচার-নির্যাতন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য সংগ্রাম করে যান। লক্ষ্যণীয় যে, আব্দুল্লাহ খান উজবেগের ২০০,০০০ লোকের গণহত্যায় শেখ ফরিদের একমাত্র শংকা ছিল : তাদের মধ্যে দু’এক জন মুসলিমও মরল কিনা এবং খানকে জিজ্ঞেস করেন : 'Certainly there would be an innocent Muhammadan among these men' (অর্থাৎ মৃতদের মাঝে অবশ্যই একজন নিষ্পাপ মুসলমান ছিল)।
মনে রাখতে হবে যে, এটা ছিল আকবরের একজন মাত্র প্রাদেশিক শাসকের কাজ। এমন বর্বর কর্মকাণ্ড আরো অনেকেই করে বেড়াতো। এরূপ অবাধ্য ও আকবরের সহনশীল নীতিতে অসষ্ট প্রাদেশিক শাসক ও বিদ্রোহীর অভাব ছিল না। একমাত্র বাংলায় আকবরকে কমপক্ষে পাঁচবার সৈন্য পাঠাতে হয় বিদ্রোহীদেরকে দমন করতে। আকবরের মুক্তচিন্তক ও মানবতাবাদী প্রধানমন্ত্রী আবুল ফজল “আকবরনামা”য় (পৃঃ ২৪৬) লিখেন : অনেক দুরাচারী ও নির্মম লোকেরা কোন এক বা একগুচ্ছ গ্রাম বা মহল্লায় হানা দিয়ে লুটপাট করতেন। এরূপ আক্রমণে পুরুষকদেরকে হত্যা ও নারী-শিশুদেরকে ধরে নিয়ে গিয়ে মুসলমান বানানো ও বিক্রি করা ছিল এযাবত মুসলিম শাসনের চিরাচরিত প্রথা। এমন আরেক প্রাদেশিক শাসক ছিলেন Sultan Hussain Khan, একজন তুর্কি, যাকে আকবর বর্খাস্ত করেছিলেন এবং পরে ক্ষমা করে দিয়ে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেন।
১ সেপ্টেম্বর ২০১১