লিখেছেনঃ তামান্না ঝুমু, আপডেটঃ November 20, 2022, 12:00 AM, Hits: 1270
৩রা আগস্ট, ২০২২-এ আমি ‘ভালোবাসি অবিরল’ শিরোনামে একটি কবিতা লিখি। কবিতাটি আমি বঙ্গরাষ্ট্রে পাঠাই। কবিতাটি এই রকম –
ভালোবাসি অবিরল
তুমি ঘুমায়ে যাও।
আমি জেগে থাকি একা।
একা ভালোবাসা জেগে থাকে প্রাণে।
জেগে থাকে ঠোঁটে তোমারে ডাকিবার ভাষা,
তোমারে পাবার বিপুল পিয়াসা।
ডাকি আমি তোমার কানে-কানে,
প্রিয়! প্রিয়তম!
ঘুমায়ে পড়ে চাঁদ নক্ষত্র,
ঘুমায়ে পড়ে পৃথিবীর সমস্ত কোলাহল।
বলে আমার পরান তোমার কানে-কানে;
ভালোবাসি, প্রিয়!
ভালোবাসি অবিরল!
বঙ্গরাষ্ট্রে কবিতাটি ৫ই আগস্ট, ২০২২-এ প্রকাশ করা হয়। এপর্যন্ত সবকিছু ঠিক ছিল।
১৫ই নভেম্বর, ২০২২ তারিখে, মানিকভাই, যিনি বঙ্গরাষ্ট্র অনলাইন পত্রিকাটির পরিচালকদের একজন, আমাকে ইমেইলে জিজ্ঞেস করেন, ভালোবাসি অবিরল কবিতাটি আমি অন্য কোথাও-ও প্রকাশ করেছি কিনা? কারণ এই কবিতাটিকে ঘিরে বঙ্গরাষ্ট্র সাইটে কিছু সমস্যা হয়েছে। সমস্যাটি হচ্ছে, বঙ্গরাষ্ট্রের ওয়েবসাইট ডোমেইন যেখান থেকে নেওয়া হয় সেই প্রতিষ্ঠান Hostgator-এ তাসকিন খান নামক কেউ একজন কপিরাইট স্বত্ব দাবি করায় হোস্টগ্যাটর বঙ্গরাষ্ট্র সাইটটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। স্থগিত করার দুই-তিনদিন আগে হোস্টগ্যাটর থেকে বঙ্গরাষ্ট্রকে নোটিশ দিয়ে এই ব্যাপার জানানো হয়। কিন্তু ওদের অধিকাংশ ইমেইল বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপন-সঙ্ক্রান্ত থাকে ব’লে মানিকভাই নোটিশের ইমেইলটি ভালোভাবে পড়ে দেখেন নি। এবং এরকম অভিজ্ঞতাও তাঁর আর কোনোদিন হয় নি, তাই তিনি আমার সঙ্গেও এ-বিষয়ে কথা ব’লে নেবার সুযোগ পান নি। নোটিশটি তিনি যখন ভালোভাবে পড়লেন তখন তিনি তাৎক্ষণাত কবিতাটি বঙ্গরাষ্ট্র থেকে সরিয়ে ফেললেন। কিন্তু ততক্ষণে হোস্টগ্যাটর বঙ্গরাষ্ট্র স্থগিত করে দিয়েছে।
হোস্টগ্যাটরের বরাবরে তাসকিন খানের আমার লেখা ‘ভালোবাসি অবিরল’ কবিতাটির কপিরাইট স্বত্ব দাবির ইমেইলটি হোস্টগ্যাটর মানিকভাইকে পাঠায়। মানিকভাই তা আমাকে ফরোয়ার্ড করেন। তাতে দেখতে পাই, তাসকিন খান ৩রা নভেম্বর, ২০২২ তারিখে স্বত্ব দাবির কাজটি করেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলার মুরাদপুর নামক এলাকার বাসিন্দা, Email : khantaskin785@gmail.com Https ://mthsite.blogspot.com এ-রকম একটি লিংক তাতে সংযুক্ত করে দেন তাসকিন, যাতে ভালোবাসি অবিরল কবিতাটি প্রকাশিত। তাসকিন খানের দাবি, বঙ্গরাষ্ট্র তার সাইট mth থেকে কবিতাটি কপি করে নিয়ে নিজেদের সাইটে ছাপিয়েছে।
ভালোবাসি অবিরল আমি লিখেছি ৩রা আগস্ট, ২০২২ তারিখে। বঙ্গরাষ্ট্রে তা প্রকাশিত হয়েছে ৫ই আগস্ট, ২০২২ তারিখে। কিন্তু mth সাইটটিতে কবিতাটি প্রকাশের তারিখ দেখলাম, ৭ই জুন, ২০২২। তার মানে, কবিতাটি আমি লেখারও দুইমাস আগে তাসকিন সেটি তার নিজের সাইটে প্রকাশ করেছেন! অর্থাৎ একটি ভুয়া তারিখ, এবং বঙ্গরাষ্টে কবিতাটি যে-তারিখে প্রকাশিত হয়, তার আগের একটি তারিখ দিয়ে তাসকিন কবিতাটি তার নিজের সাইটে প্রকাশ করেন। এবং বঙ্গরাষ্ট্র, একমাত্র যেখানে আমি কবিতাটি পাঠিয়েছি, এবং যেখানে তা প্রকাশিত হয়েছে, সেখান থেকেই তাসকিন কবিতাটি চুরি করে নিজের সাইটে ছাপেন এবং বঙ্গরাষ্ট্রের নামেই ডোমেইনের কাছে কপিরাইট স্বত্ব দাবি করে অভিযোগ করেন।
কপিরাইট স্বত্ব দাবি করতে পারেন লেখক নিজে অথবা লেখক যে-প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট লেখার স্বত্ব দেন, সে-প্রতিষ্ঠান। তাসকিন খান কিংবা তার সাইট mth-এর নাম আমি এর আগে জীবনে কোনোদিন শুনি নি। শুধু এই জন্মে নয়, আমার যদি কখনো পূর্বজন্ম হয়ে থাকে, সেই জন্মেও শুনি নি। এমন কী, আমার চোদ্দপুরুষ, আমার পূর্ব পূর্ব পূর্ব আদি আদি আদি পিতামাতাদের কেউও এদের নাম শুনেছেন, এমন কোনো প্রমাণও নেই। তাসকিন খান বা তার সাইটটির কাছে আমি কোনদিন আমার কোনো লেখা পাঠাই নি। তাসকিন আমার অনুমতি ছাড়া আমার কবিতাটি তার সাইটে ছেপেছেন। এটা অন্যায় অসততা ও চুরি। এবং যে পত্রিকা থেকে তিনি কবিতাটি চুরি করেছেন, সে-পত্রিকার নামেই মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। যেটি আরো বড় রকমের দাগাবাজি। এবং কবিতাটি চুরি করে নিজের সাইটে ছাপানোর সময় ভুয়া তারিখ দিয়েছেন, যাতে ধরা না পড়েন। যা দাগাবাজির দাগাবাজি। তার মানে তাসকিন খান একজন অতি উঁচুদরের দাগাবাজ, দাগাবাজের প্রপিতামহ।
অনলাইনে অগণিত লেখালেখির সাইট আছে, তাতে অগণিত মানুষ লেখেন। কিন্তু তাসকিন খান আমার একটি কবিতা কেন চুরি করলেন? এবং তা বঙ্গরাষ্ট্র থেকেই কেন? তিনি নিজেই তা ভাল জানেন। তিনি চুরি করলেন এবং চুরির মাল বদহজমজনিত কারণে কিছু সার্কাস দেখালেন। যে-সার্কাসে বঙ্গরাষ্ট্রের ভোগান্তি হলো। কিছুদিন যাবত আমি বঙ্গরাষ্ট্রে নিয়মিত লিখছি। আমার চিন্তাভাবনা ও মানসিকতার সঙ্গে মিলে ব’লে এখানে লিখতে এবং এখানকার অন্যান্য লেখকদের লেখা পড়তে আমার ভালো লাগে। আমারই একটা লেখাকে ঘিরে বঙ্গরাষ্ট্র তথা মানিকভাইকে কিছু ঝামেলার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ব্যাপারটি আমার জন্য মোটেই সুখকর নয়।
তাসকিন খানের কাছে আমি একটি ইমেইল পাঠিয়েছিলাম, পুরো ব্যাপারটি নিয়ে। তাকে বলেছিলাম, আমার লেখা আমার অনুমতি ছাড়া কেন তিনি নিজের সাইটে ছাপালেন এবং তা নিয়ে নির্দোষকে দোষারোপ করে কেন এতো ঝামেলা করলেন--এই প্রশ্নগুলির সদুত্তর যেন তিনি আমাকে দেন। কিন্তু তিনি আমার ইমেইলের উত্তর দেন নি।
তাসকিন সাহেব টাইম-মেশিন বানিয়ে ফেলেছেন। তাতে চেপে তিনি দুইমাস অতীতে ফিরে গেছেন। এবং কবিতাটির জন্মের আগেই তিনি তা নিজের ব্লগ সাইটে ছেপে দিয়েছেন। টাইম-মেশিন— যে-জিনিসের কথা স্টিফেন হকিং ভেবেছিলেন, এবং আজ পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞানী যা বানাতে সক্ষম হন নি, তা তাসকিন সাহেব বানিয়ে ফেলেছেন এবং এর চমকপ্রদ ব্যবহারও করে ফেলেছেন। তিনি শুধু কবিতা চোরই নন, বিশাল বিজ্ঞানীও!
তাসকিন আহমেদ/ খান কর্তৃক চুরিকৃত কবিতাটির স্কিনশট নিম্নে দেওয়া হলো :
Hostgator-এর নিকট তাসকিন আহমেদ এর পাঠানো ভুয়া অভিযোগপত্রের স্ক্রিনশট নিম্নে দেওয়া হলো :