তোমার অলৌকিক সুরে (সান্ত্বনা রাংসাকে) – শামসুজ্জোহা মানিক (কবিতা)
লিখেছেনঃ শামসুজ্জোহা মানিক, আপডেটঃ July 3, 2009, 6:00 PM, Hits: 3643
তোমার অলৌকিক সুরে (সান্ত্বনা রাংসাকে) – শামসুজ্জোহা মানিক (কবিতা)
সেটা ছিল কোনো এক গানের রাত
সেই রাতে পাহাড়ে ছিল জ্যোৎস্না
মাতাল হাওয়ার মাতামাতি
আর ছিল জ্যোৎস্নায় সিক্ত বনরাজি।
তখন তোমার আচিক গানের সুর
ঝড়ের মতন আমার বক্ষের ভিতর
ভেঙ্গে চুরে বয়ে যায়,
অথবা সাগরগর্জন যেন আমাকে
পেয়ে বসে নিশির ডাকের মত একা উপকূলে।
সেদিন রাতে পাহাড়ে ছিল জ্যোৎস্না
অথবা সবই ছিল শুধু কল্পনা আমার
তোমার গানের সুরে।
যাকে দেখি নাই কোনো দিন
তার সেই সুর আমাকে নিয়ে গেছে
জ্যোৎস্নায় ধোয়া পাহাড়ের পাদদেশে।
আমি নতজানু তখন
আমার কল্পনায় সেখানে,
আর দু’হাতে মুখ ঢেকে বুকের ভিতরে অঝোরে কাঁদি;
কেন কারো সুর হয় এমন
কষ্টের অথবা অসহ সুখের?
সেই রাতে জ্যোৎস্না ছিল পাহাড়ে
অথবা সবই ছিল কল্পনা,
সত্য শুধু ছিল আচিক গানের মূর্ছনা
তোমার অলৌকিক সুরে।
১৮ মার্চ, ১৯৯৯ খ্রীষ্টাব্দ
৪ চৈত্র, ১৪০৫ বঙ্গাব্দ
(সান্ত্বনা রাংসা একজন গারো গায়িকা। গারো জাতিসত্তা নিজেদেরকে গারো বলে না। তারা নিজেদেরকে মান্দি বা মান্দে কিংবা আচিক বলে। গারো ভাষায় আচিক শব্দের মূল অর্থ পাহাড়। পাহাড়ের মানুষ বা জাতি অর্থে আচিক। আর মান্দি বা মান্দে অর্থ মানুষ। গারোদের উপর অনুসন্ধানমূলক কাজের প্রয়োজনে আমি এক সময় বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মত বর্তমান নেত্রকোনা জেলার বিরিশিরিতে যাই। সেই রকম একটি ভ্রমণের সময় গারো পাহাড়ের নিকটবর্তী বিরিশিরিতে অবস্থানকালে এক জ্যোৎস্নাময় রাতে টেপ রেকর্ডারে গারো গায়িকা সান্ত্বনা রাংসার ধারণকৃত গারো ভাষায় গাওয়া গানের উদাত্ত সুর শুনে আমার মনে যে মুগ্ধ অনুভূতি হয়েছিল তার ভিত্তিতে কবিতাটি লিখিত। গায়িকার সঙ্গে আমার কখনও পরিচয় হয় নাই। – লেখক)
অনলাইনঃ ৪ জুলাই, ২০০৯
সেটা ছিল কোনো এক গানের রাত
সেই রাতে পাহাড়ে ছিল জ্যোৎস্না
মাতাল হাওয়ার মাতামাতি
আর ছিল জ্যোৎস্নায় সিক্ত বনরাজি।
তখন তোমার আচিক গানের সুর
ঝড়ের মতন আমার বক্ষের ভিতর
ভেঙ্গে চুরে বয়ে যায়,
অথবা সাগরগর্জন যেন আমাকে
পেয়ে বসে নিশির ডাকের মত একা উপকূলে।
সেদিন রাতে পাহাড়ে ছিল জ্যোৎস্না
অথবা সবই ছিল শুধু কল্পনা আমার
তোমার গানের সুরে।
যাকে দেখি নাই কোনো দিন
তার সেই সুর আমাকে নিয়ে গেছে
জ্যোৎস্নায় ধোয়া পাহাড়ের পাদদেশে।
আমি নতজানু তখন
আমার কল্পনায় সেখানে,
আর দু’হাতে মুখ ঢেকে বুকের ভিতরে অঝোরে কাঁদি;
কেন কারো সুর হয় এমন
কষ্টের অথবা অসহ সুখের?
সেই রাতে জ্যোৎস্না ছিল পাহাড়ে
অথবা সবই ছিল কল্পনা,
সত্য শুধু ছিল আচিক গানের মূর্ছনা
তোমার অলৌকিক সুরে।
১৮ মার্চ, ১৯৯৯ খ্রীষ্টাব্দ
৪ চৈত্র, ১৪০৫ বঙ্গাব্দ
(সান্ত্বনা রাংসা একজন গারো গায়িকা। গারো জাতিসত্তা নিজেদেরকে গারো বলে না। তারা নিজেদেরকে মান্দি বা মান্দে কিংবা আচিক বলে। গারো ভাষায় আচিক শব্দের মূল অর্থ পাহাড়। পাহাড়ের মানুষ বা জাতি অর্থে আচিক। আর মান্দি বা মান্দে অর্থ মানুষ। গারোদের উপর অনুসন্ধানমূলক কাজের প্রয়োজনে আমি এক সময় বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মত বর্তমান নেত্রকোনা জেলার বিরিশিরিতে যাই। সেই রকম একটি ভ্রমণের সময় গারো পাহাড়ের নিকটবর্তী বিরিশিরিতে অবস্থানকালে এক জ্যোৎস্নাময় রাতে টেপ রেকর্ডারে গারো গায়িকা সান্ত্বনা রাংসার ধারণকৃত গারো ভাষায় গাওয়া গানের উদাত্ত সুর শুনে আমার মনে যে মুগ্ধ অনুভূতি হয়েছিল তার ভিত্তিতে কবিতাটি লিখিত। গায়িকার সঙ্গে আমার কখনও পরিচয় হয় নাই। – লেখক)
অনলাইনঃ ৪ জুলাই, ২০০৯