লিখেছেনঃ তাহিয়া পাপড়ি, আপডেটঃ May 8, 2011, 1:57 PM, Hits: 18615
প্রতিদান
প্রবল বর্ষায় ভিজে যায় শরীর
ভিজে না মন এতটুকু তার।
(আন্দামান, ভারত থেকে প্রকাশিত পত্রিকা ‘বাক্প্রতিমা’য় মুদ্রিত।)
প্রতীক্ষার রাত
ফোঁটা ফোঁটা শিশির কণা ভিজিয়ে দিয়ে
যায় আমাদের এই ছোট্ট উঠোন,
সারারাত ধরে সমস্ত
ভিজে যায় শালিকের ডানা।
পালক গুটিয়ে থর থর কাঁপে সারারাত,
তাকায় আকাশের দিকে
কখন ভোর হয়!
শালিকের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি পুড়িয়ে দেয় হৃদয়।
নারী
রাত্রির অন্ধকারে শ্মশানে
জ্বলে ওঠে চিতা
শবকুমারীর মুখের মলিন
ছায়া মৃদু হেসে বলে,
কত আর জ্বালাবে আমায়?
যতই পুড়িয়ে ছাই কর
কোনোদিন পারবে না পোড়াতে আর,
জ্বলন্ত চিতার ঘ্রাণ
ভাসে বাতাসে বাতাসে
পুড়ে যায় চন্দন কাঠ,
ছাই হয় কুমারীর শরীর।
কুমারী বলে,
অকারণে কাঠ, ঘি পুড়িয়ে কী লাভ?
ছাই হবে তাতে, সেইতো ছাই, ধুঁয়া!
অন্ধকারের নগ্ন নির্জনতায় দাঁড়িয়ে
দেখেছি আমি, এই ভয়াবহ বর্বরতা
কেউ কোনোদিন জানবে না পৃথিবীর,
সতীত্বের বাঁধন ছিঁড়ে যাওয়ার অপরাধে
ছাই হয় নারীর শরীর।
প্রবল কান্নায় কেঁপে ওঠে
বাতাসের ঠোঁট।
জগতের পাপের বোঝায় ভারাক্রান্ত
নারীর শরীর পুড়ে খাক হয় চিতায়
পোড়ে না নারী।
ঘুটঘুটে অন্ধকারে কাঁদে শ্মশান
তার বিদীর্ণ আর্তনাদে
ভারি হয় চারিদিক
বেজে ওঠে সকরুণ শঙ্খধ্বনি
নারীর শরীর পুড়ে ছাই হয়
পোড়ে না নারীত্ব।
অবিসংবৃত অতীত
নিয়ম-অনিয়মের ব্যাপ্ততায় গুটিশুটি
পড়ে আছে, অবিসংবৃত অতীত।
যে চলে গেছে কুয়াশায় বহুদূরে
অন্ধকারে
তবে কেনো কষ্ট পাও ভেবে?
পূর্ণেন্দুর অঘ্রাণে খোলা জানালায়
ভেসে আসে, তোমার
অস্পষ্ট কান্নার স্বর,
কেমন করে কেটে গেল, জীবনের
ঊনত্রিশ বছর?
কী অবিসংবৃত অতীত! বলতে,
তোমার’ শুকিয়ে যায় গলা,
চোখ ভরে যায় জলে,
কেঁপে ওঠে ঠোঁট,
তোমার উজ্জ্বল মুখ ম্লান হয়
কৌমুদীর জ্যোৎস্নায়।
হায় জীবনের ঊনত্রিশ বছর কেটে গেল;
অবিসংবৃত ব্যাপ্ততায়।
পৃথিবী কেঁপে উঠল আবার
তোমার অস্ফুট আর্তনাদে।