লিখেছেনঃ শামসুন নাহার, আপডেটঃ May 5, 2009, 7:42 AM, Hits: 1643
বাপ-বেটাতে যাচ্ছে হাটের দিকে।
সঙ্গে আছে গাধা,
বেচতে হবে তাকে।
পথের পাশে জটলা করে
পাড়ার যত ছেলে।
তাদের দিকে চেয়ে চেয়ে
মুচকি হেসে বলে,
“বাবা যেমন বুদ্ধিমান
তেমনিই তার ছেলে।
বাপে-বেটায় গাধার পাশে হাঁটে
একেই বলে বুদ্ধিমানের
বুদ্ধি এটা বটে।”
এই কথাটা শুনে চাষী ভায়া
ভাবল আপন মনে,
ঠিক কথাত এটা।
গাধা সাথে নিয়ে
ঠিক হয় না এমনি করে হাঁটা।
ছেলে তবে উঠুক গাধার পিঠে।
আমি না হয় হেঁটেই যাব হাটে।
আর কিছুটা দূরে
কয় বুড়োতে তর্ক শুরু করে।
“এমন একটা যুগ এসেছে ভায়া
বাপের পরে নেইকো কোন মায়া।”
গাধার পিঠে বসা ছেলের দিকে
হাত উঁচিয়ে বলে,
“এখন শুধু এইটুকুত নয়।
আরও কত দেখবে কলি কালে।”
“গাধার পিঠে ছেলে চড়ে
বুড়ো পায়ে হাঁটে।
এখন এটা এ যুগেরই
নিয়ম-কানুন বটে।”
ছেলে এখন লজ্জা পেল
নামল মাটির পরে।
বাপ বসল গাধার পিঠে চড়ে।
এখন আবার উল্টো ফ্যাসাদ
বাধে।
পথের যত মেয়ে লোকের
কথা বলার ছাঁদে।
“এমন ধারা দেখিনি বোন
জন্মদাতা বাবা হয়ে
এমন কঠিন মন।”
“আহা মরি, ঐত কচি ছেলে,
কষ্ট করে হাঁটছে পথে
বাপ বুড়োকে গাধার
পিঠে তুলে।”
চাষী এখন পড়ল বিষম লাজে
ভুলটা তাদের হচ্ছে প্রতি কাজে।
ভুল শুধরে বাবা বলে,
“আয়রে বেটা আয়
বাপ বেটাতে একই সাথে
গাধার পিঠে যাই।”
বাপ বেটাতে গাধার পিঠে
চড়ল অকাতরে।
কেহ কিছু তাদের যেন
বলতে নাহি পারে।
পথে যেতে একটি লোকে
বলল, “শুন ভায়া,
তোমার কি নাই এতটুকু
লজ্জা-শরম-হায়া?
তা নইলে অবলা এই
জীবনটির ’পরে
নিঠুর হতে পার কেমন করে?
এখন তোমার গাধাটাকেই
কাঁধে নেয়া ভাল
জানবে তবে ঠিক ধর্ম
রক্ষা করা হলো।”
হতাশ হয়ে বাপটা তখন বলে,
“আয়রে ছেলে আয়
গাধাটাকে এখন তবে
কাঁধে নিয়েই যাই।”
যেমন কথা তেমনি কাজ হল
বাপে বেটায় গাধাটাকে
কাঁধে তুলে নিল।
গাধা সহ যখন তারা
উঠল নদীর পুলে,
চারপা ছঁুড়ে ভয়-তরাসে গাধা
পড়ল নদীর জলে।
“সবার কথায়, আছি আমি”
লোকে একেই বলে।
অনলাইনঃ ৫ মে, ২০০৯